ছবি: প্রতীকী
চন্দ্রজিৎ মজুমদার, কান্দি: সোশ্যাল মিডিয়ায় রিলস (Reels) তৈরি করা নেশায় পরিণত হয়েছিল। দিনের বেশিরভাগ সময়েই সেই কাজে বুঁদ হয়ে থাকত কিশোরী। কমছিল পড়াশোনার সময়। তা নিয়ে মায়ের চিন্তা বাড়ছিল। মেয়ের পড়াশোনা নিয়ে তিনি বারবার সাবধান করতেন। তাতেও কাজ না হওয়ায় বকাবকি শুরু করেন। আর সেই অভিমানে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হল কিশোরী। শুক্রবার মুর্শিদাবাদের (Murshidabad)বড়ঞার পারশালিকা গ্রামে নিজের বাড়ি থেকেই তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মেয়ের আচমকা এমন পরিণতিতে শোকে পাথর পরিবার। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করে পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তে।
মুর্শিদাবাদের বড়ঞার নিমা বাহাদুরপুর হাই স্কুলের ছাত্রী বছর চোদ্দর ঋতু বাগদি। সম্প্রতি সে রিলসে মজেছিল। নিজের নানা রিলস সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) শেয়ার করত। সেসব ধীরে ধীরে ভাইরালও হচ্ছিল। আর সেই নেশায় পড়াশোনা প্রায় ভুলে দিনের অধিকাংশ সময় সে ব্যয় করত রিলস তৈরি করতে। পড়াশোনায় (Education) ফাঁকিও পড়ছিল। ঋতুর এসব কাণ্ডকারখানা পছন্দ ছিল না মায়ের। তিনি মেয়েকে বকাবকি করতেন। তবু মায়ের কথায় কান দেয়নি নবম শ্রেণির ছাত্রী।
শুক্রবারও ঋতু মন দিয়ে রিলস করছিল। সেসময় মা ডাকে তাকে। তিনি জানিয়েছেন, ”দেখছিলাম মেয়ে মাথায় সাদা একটা কাপড় জড়িয়ে মোবাইলে একটি ছেলের সঙ্গে কথা বলছে। আমি বলছিলাম, ওসব ছেড়ে এদিকে আয়, তোর বাবা আসবে, খেতে দিতে হবে। তাও শোনেনি। তারপর আমি গিয়ে কাপড়টা কেড়ে নিয়েছিলাম। তারপর ও এসে আলু ছাড়ানোর কাজে হাত লাগাল। আমি বললাম, ঠিক আছে, আমি তবে জল নিয়ে আসি। বলে আমি গিয়েছি দুই কলসী জল আনতে। সেই জলটুকু আনতে যা সময় লাগল। তারপর ফিরে দেখি, মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে…।” এরপরই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় বড়ঞা থানার পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে তার পরই। তবে পরিবারের অনুমান, রিলস করা নিয়ে মায়ের সঙ্গে মতান্তরের জেরেই সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.