ছবি: প্রতীকী
ধীমান রায়, কাটোয়া: মেধাবী ছাত্র। কিন্তু কয়েকদিন ধরেই ইতিহাস পরীক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিল সে। ঠিকঠাক মনে রাখতে না পারায় তার আশঙ্কা ছিল ইতিহাস (History) পরীক্ষা আশানুরূপ হবে না। এই আশঙ্কা থেকেই পরীক্ষা শুরুর আগের দিন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হল এক মাধ্যমিক (Madhyamik) পরীক্ষার্থী। পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার আউড়িয়া গ্রামের ঘটনায় স্তম্ভিত সকলে। পুলিশ সূ্ত্রে খবর, মৃত ওই পরীক্ষার্থীর নাম বিশাল চৌধুরী। রবিবার সকালে নিজের ঘর থেকেই বিশালকে ঝুলন্ত (Hanging)অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তখনও ঘরের বিছানায় খোলা ইতিহাস বই। এই ঘটনায় এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আউড়িয়া গ্রামেই বিশালের মামাবাড়ি। তার মা চন্দ্রিকাদেবী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক নেই চন্দ্রিকাদেবীর। বিশালের বাবা তন্ময়বাবু কাটোয়ায় থাকেন। চন্দ্রিকাদেবী তার ছেলেকে নিয়ে থাকতেন বাপের বাড়িতে। আউড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র বিশাল। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান।
মৃতের মামা রাহুলদেব দাঁ বলেন, “ছোট থেকে বিশাল পড়াশোনায় যে খুব ভাল ছিল, তা নয়। তবে নবম শ্রেণি থেকে খুব পড়াশোনা করত। টেস্ট পরীক্ষায় ৬৮৫ নম্বর পেয়েছিল। সবসময় বই নিয়েই থাকত। টেস্টে ইতিহাসে ৮৫ নম্বর পায়। কিন্তু কয়েকদিন ধরেই খুব টেনশন করছিল ইতিহাস নিয়ে। ওর ভয় ছিল, ইতিহাসের নোট মনে রাখতে পারছে না, মনের মতো নম্বর পাবে না।”
রবিবার সকালে চা-বিস্কুট খেয়ে দোতলায় নিজের ঘরে পড়তে চলে যায় বিশাল। তারপর হঠাৎ শব্দ শুনে তার মা দোতলায় যান। জানালা দিয়ে ছেলেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান চন্দ্রিকাদেবী। লোকজন ডাকেন। দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। রাহুলদেববাবু আরও বলেন, “করোনা আবহে দীর্ঘদিন বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ হয়ে যায়। তার ফলে আমার ভাগ্নে চুপচাপ থাকত। পড়াশোনার বাইরে অন্য কিছু ভাবত না।” সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। তার আগে এক মেধাবী ছাত্রের এই ধরনের মৃত্যুতে স্তম্ভিত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে এলাকাবাসীও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.