Advertisement
Advertisement

Breaking News

Hallong Bungalow Fire

হলংয়ে অগ্নিকাণ্ডের আঁচ, কপাল পুড়ল ডুয়ার্সের পর্যটনের!

উত্তরের জঙ্গল, বন্যপ্রাণ ঘিরে যে পর্যটন হতে পারে সেই পথ খুলে দিয়েই অনন্য হয়ে উঠেছিল জলদাপাড়ার হলং বাংলো।

Hallong Bungalow Fire makes effect in tourism
Published by: Sayani Sen
  • Posted:June 20, 2024 3:21 pm
  • Updated:June 20, 2024 5:30 pm

অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: পর্যটনের মুকুট থেকে খসে পড়ল হিরের পালক। জলদাপাড়ার ‘হেরিটেজ’ হলং বাংলোর আগুনের আঁচে পুড়ল উত্তরের কপাল। ঐতিহ্য নিশ্চিহ্ন হওয়ায় বিরাট ধাক্কার মুখে পড়বে হলং বাংলোকে কেন্দ্র করে ডুয়ার্সে গড়ে ওঠা পর্যটন শিল্প। এমনই শঙ্কায় বিমর্ষ উত্তরের পর্যটন ব্যবসায়ী থেকে বিশিষ্টজনেরা। যখন উত্তরে পর্যটন কেন্দ্র বলতে ছিল শুধুমাত্র দার্জিলিং ও কালিম্পং। ঠিক সেই সময় ডুয়ার্সে পর্যটনের দুয়ার খুলে দিয়েছিল জলদাপাড়ার হলংয়ের ‘হেরিটেজ’ বাংলা। সেটার টানে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ভিড় বাড়তে বিশ্ব পর্যটন মানচিত্রে জায়গা করে নেয় ডুয়ার্স।

উত্তরের জঙ্গল, বন্যপ্রাণ ঘিরে যে পর্যটন হতে পারে সেই পথ খুলে দিয়েই অনন্য হয়ে উঠেছিল জলদাপাড়ার হলং বাংলো। সেটার কারিগর অবশ্য ছিলেন প্রয়াত প্রাক্তন বনমন্ত্রী পরিমল মিত্র। তিনি উদ্যোগী হয়ে হলং বাংলোর দুটো রুম পর্যটকদের থাকার জন্য ব্যবস্থা করেন। সেই শুরু। এর পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। পাহাড় ছাড়াও বিকল্প পর্যটনের দরজা খুলে যেতে এখানে ভিড় জমাতে শুরু করেন দেশ বিদেশের পর্যটকরা। রাজ্য ইকো ট্যুরিজমের চেয়ারম্যান রাজ বসু দাবি করেন, বন্যপ্রাণের জন্য দেশে জঙ্গল এলাকা সংরক্ষণের সূত্রপাত হয়েছিল জলদাপাড়া থেকে। সেটাও হলং বাংলোর দৌলতে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বিচারকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ নিয়ে আদালতে পুলিশ]

জঙ্গল, তৃণভূমি, বিরাট তৃণভোজীদের সম্ভার ঘিরে পর্যটকদের আকর্ষণ দিনের পর দিন বেড়েছে। হলং বাংলোতে থেকে পর্যটকরা সেসব উপভোগ করার সুযোগ পেয়েছেন। রাজ বলেন, “হলং বনবাংলো ‘হেরিটেজ’ ছিলো। এখানে দেশ-বিদেশের প্রচুর বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব এসেছেন। বিশ্বের দরবারে উত্তরের জঙ্গলকেন্দ্রীক পর্যটনকে পৌঁছে দিয়েছিল সেই হেরিটেজ বাংলো।” এরমত প্রবীণ গান্ধী গবেষক, আলিপুরদুয়ার শহরের বাসিন্দা পরিমল দে। তিনি বলেন, “ডুয়ার্স এলাকার পর্যটনের আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দিয়েছে হলং। সেটা ভস্মীভূত হওয়ায় অনেকেই মুখ ফেরাবেন। আমি অনেকবার সেখানে থেকেছি। এখন আর মন চাইবে না।”

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে জ্বলন্ত হলং বাংলোর ছবি ভাইরাল হতে শোকের ছায়া নেমে আসে উত্তর ছাড়িয়ে গোটা দেশে। এক বনকর্তা বুধবার জানান, রাতভর ফোন এসেছে। দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ফোনে একই প্রশ্ন ছিলো এটা কি হলো? অনেকে স্মৃতি আকড়ে হাউহাউ করে কেদেছেন। লাটাগুড়ি রিসর্ট অ্যাসোসিয়েশনের কর্ণধার দিব্যেন্দু দে বিষন্ন মনে জানান, এখন জিপ সাফারি, এলিফেন্ট রাইডিং অনেক কিছুই শোনা যায়। হলং বাংলো তৈরি না হলে উত্তরে এসবের কিছুই হতো না।

জঙ্গলকেন্দ্রিক পর্যটনের ধারণা তৈরি করেছে ওই ঐতিহ্যবাহী বাংলো। উত্তরে দেশ-বিদেশের যে পর্যটকরা আসেন তাদের বেশিরভাগের স্বপ্ন থাকে একদিনের জন্য হলেও হলং বাংলোতে থাকবেন। সেখানে থাকার সুযোগ মেলা ছিল ভাগ্যের ব্যাপার। মঙ্গলবার রাতের পর সেই জায়গাটা আর রইল না। দিব্যেন্দুবাবু বলেন, “হলং উত্তরের পর্যটনের মাইল স্টোন ছিলো। সেটাও চলে গেলো। রাতে ঘুমোতে পারিনি। কিছুই ভালো লাগছে না। উত্তরে পর্যটনের বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল।”

[আরও পড়ুন: কাঞ্চনজঙ্ঘা দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ট্রেনের কামরায় আগুন, আতঙ্ক হায়দরাবাদে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ