মেয়েদের মর্মান্তিক পরিণতিতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন সাগরিকা দাস। ছবি: রঞ্জন মাইতি।
চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: নৃশংস খুন এবার হলদিয়ায়। মেয়েদের গলার নলি কেটে খুন। বাবার মানসিক বিকৃতির বলি দুই নাবালিকা। বাড়িতে যখন কেউ ছিল না, তখনই এক ব্যক্তি এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ । রবিবার একটু রাতের দিকে বাজারে বেরিয়েছিলেন স্ত্রী। সেই সময় দুটি পৃথক ঘরে দুই মেয়েকে খুন করে দরজায় তালা মেরে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত বিপ্লব দাস। গভীর রাতে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হলদিয়ার।
হলদিয়ার ভবানীপুর থানার বড়বাড়ি গ্রামের বাসিন্দা বিপ্লব দাস। তার দুই মেয়ে। বড় মেয়ে সীমা অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী, আর ছোট মেয়ে পুজা চতুর্থ শ্রেণির। বিপ্লব কার্যত বেকার। তার স্ত্রী সাগরিকাদেবীই ঠোঙা বানিয়ে সংসার চালান। বউমাকে সাহায্য করতে সংসারের হাল ধরেছেন শাশুড়ি সন্ধ্যারানি দাসও। তিনি স্থানীয় এক নার্সিংহোমে আয়ার কাজ করেন। রবিবার সন্ধ্যায় তিনি কর্মস্থলে ছিলেন। সন্ধ্যার পর মেয়েরা পড়তে বসলে বাজারে যান সাগরিকাদেবী। সেই সময় বাড়িতে ছিল বিপ্লব। অভিযোগ, ফাঁকা বাড়িতে প্রথমে বড় মেয়ে সীমাকে আলাদা ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে গলার নলি কেটে খুন করে সে। তারপর একই কায়দায় মেরে ফেলে ছোট মেয়েকেও। রক্তাক্ত দেহ দুটিকে ফেলে রেখে বাড়িতে তালা মেরে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত। এদিকে বাজার সেরে বাড়ি ফিরতে বেশ দেরিই হয়েছিল সাগরিকদেবীর। বাড়ির সামনে এসে দেখেন দরজা তালা বন্ধ। প্রথমটায় হকচকিয়ে যান। প্রতিবেশীদের ডাকেন, তালা ভাঙা হয়। ঘরে ঢুকতেই মর্মান্তিক দৃশ্য। সাগরিকা ও প্রতিবেশীরা দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় দুটি ঘরে সীমা ও পূজা পড়ে আছে। খবর দেওয়া হয় হলদিয়ার ভবানীপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে দেহদুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। রাতে শাশুড়ি ফিরলে থানায় গিয়ে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন সাগরিকা দাস।
নাবালিকা দুই মেয়েকে খুনে অভিযুক্ত বিপ্লব দাসের খোঁজে তল্লাশিতে নামে পুলিশ। রবিবার গভীর রাতে বড়বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরের ডালিম্বোচক গ্রাম থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাতভর থানায় দফা দফায় চলে জিজ্ঞাসাবাদ। তদন্তকারীদের দাবি, বিপ্লব মানসিকভাবে সুস্থ নয়। তবে এখনও পর্যন্ত খুনের কারণ স্পষ্ট নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.