নবেন্দু ঘোষ, বসিরহাট: ফের চরমে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। প্রশাসনিক টানাপোড়েনের জেরে মঙ্গলবার ভেস্তেই গেল ধামাখালিতে রাজ্যপালের বৈঠক। উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেন, রাজ্য প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া বৈঠকে কোনও সরকারি উচ্চপদস্থ আধিকারিককে ডাকা সম্ভব নয়। তিনি নিজেও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বৈঠকে অনুপস্থিত থাকেন। তাই রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চাইলেও জেলাশাসকের অনুমতি না মেলায় বাতিল হয়ে গেল ধামাখালির বৈঠক।
এদিক, এদিন প্রশাসনিক কর্তারা বৈঠকে অনুপস্থিত থাকায় ক্ষুব্ধ হন রাজ্যপাল। গোটা বিষয়টিকে সাংবিধানিক সংকট বলে আখ্যা দেন ধনকড়। ক্ষোভ উগরে তিনি বলেন, ‘রাজ্যপাল কি রাজ্যের অধীনস্থ? রাজ্যপাল কথা বলতে চাইলে রাজ্যের অনুমতি লাগবে কেন?’ এরপর ঘটনার নিন্দা করে তিনি বলেন, ‘রাজ্যপাল হিসাবে যেখানে খুশি যেতে পারি, কিন্তু যেখানেই যাচ্ছি সেখানেই জেলাশাসক অসুস্থ হচ্ছেন। মন্ত্রীদের বয়কটের সঙ্গে সরকারি আমলারাও যুক্ত হচ্ছেন কেন?’ উল্লেখ্য, তিনি জানিয়েছেন, গত ১৭ অক্টোবর তিনি প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে বৈঠকের কথা জানান। কিন্তু ২১ তারিখ জেলাশাসক চিঠি দিয়ে জানান, শীর্ষ প্রশাসনিক আধিকারিকদের অনুমতি ব্যতীত আমলাদের আমন্ত্রণ অসম্ভব। যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী সপার্ষদ উত্তরবঙ্গ সফরে রয়েছেন। তাই অনুমতি মেলেনি বৈঠকের। এতেই ক্ষুব্ধ হন রাজ্যপাল। তাঁর কটাক্ষ, ‘সরকার কি ছুটিতে চলে গিয়েছে? মুখ্যমন্ত্রী ছুটিতে যেতেই পারেন, কিন্তু সরকার ছুটিতে যেতে পারে না।’
প্রসঙ্গত, ধামাখালিতে বৈঠকের পর সুন্দরবনে প্রশাসনিক বৈঠক করার কথা রাজ্যপালের। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা সভাধিপতিকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও ওই একই কারণ দেখিয়ে আমন্ত্রণ নাকচ করেন জেলাশাসক। এদিন ধামাখালির বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর বিশেষ লঞ্চে সুন্দরবনের সজনেখালির উদ্দেশে রওনা হন রাজ্যপাল। বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া হেমনগর কোস্টাল থানা এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ধনকড়ের। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে শিলিগুড়িতে রাজ্যপালের প্রশাসনিক বৈঠক নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল রাজ্য। সেই বৈঠকে জেলাশাসক, আমলা, তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা কেউই উপস্থিত ছিলেন না। আর এবার কাউকে আমন্ত্রণই করল না জেলা প্রশাসন। এর জেরে ফের সংঘাতের আবহ রাজ্য-রাজ্যপালের মধ্যে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.