Advertisement
Advertisement

Breaking News

দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াকে গুটখার পিক, সমালোচনার ঝড় নেটদুনিয়ায়

সোশ্যাল সাইটে ভাইরাল ছবি৷

Gutkha spit on Dakshineswar Skywalk
Published by: Sayani Sen
  • Posted:November 7, 2018 9:44 am
  • Updated:November 7, 2018 9:44 am  

নব্যেন্দু হাজরা: পূর্ণিমার আকাশে বিকশিত পূর্ণচন্দ্রের মতোই তার ছটায় চারদিক বিভোর হয়ে উঠেছিল। কিন্তু রাতও গড়াল না। গায়ে লেগে গেল কলঙ্কের দাগ। চালু হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণেশ্বরের নজরকাড়া স্কাইওয়াক কলঙ্কিত হয়ে গেল পান-গুটখার পিকে। কদর্য সেই দাগ রীতিমতো রাঙিয়ে দিয়েছে স্কাইওয়াকের ঝকঝকে রেলিং। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ভাইরাল হয়ে ওঠা যে ছবি দেখে ভিরমি খাচ্ছে আমজনতা। বইছে সমালোচনার ঝড়। প্রত্যেকের প্রশ্ন, যাঁদের সুবিধার্থে স্কাইওয়াক করা হল, তাঁদেরই কেউ কেউ কী করে এতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন হতে পারেন?

[দক্ষিণেশ্বরে রানি রাসমণির নামে স্কাইওয়াক, উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী]

দক্ষিণেশ্বরে ভবতারিণী মায়ের গর্ভগৃহে পুণ্যার্থীরা যাতে বিনা বাধায় সরাসরি চলে যেতে পারেন, সেই লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে মাথা তুলেছে স্কাইওয়াক। এটি প্রাযুক্তিক দক্ষতার বড় নিদর্শনও বটে। বস্তুত গোটা ভারতেই এমন উড়ালপথ বিরল। সোমবার, কালীপুজোর আগের সন্ধ্যায় স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর হাতে সেটির উদ্বোধন হয়েছে। উদ্বোধনের প্রায় সঙ্গে সঙ্গে বাংলার এহেন গর্বের গায়ে গুটখা মাখা থুতুর দাগ দেখে নেটিজেনরা যেমন বিরক্ত, তেমন প্রমাদ গুণছেন নির্মাণ বিশেষজ্ঞরা। “শুধু দৃশ্যদূষণ নয়। গুটখার পিক ক্রমাগত পড়তে থাকলে যে কোনও ব্রিজেই যে কোটিং থাকে তা সরে যায়। তারপর জং ধরা শুরু হয়। ফলে ক্ষয় হয়। ব্রিজ, ফ্লাইওভার যে কোনওকিছুরই কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ে। কারণ ব্রিজের জয়েন্টের কোটিং বাইরের জলীয় বাষ্পের থেকে লোহা, স্টিলকে রক্ষা করে।”–জানান এক ব্রিজ বিশেষজ্ঞ।

Advertisement

[দীপাবলির আনন্দ নয়, মেয়েকে বাঁচাতে ঠাকুরের কাছে মাথা ঠুকছেন বৃদ্ধ দম্পতি]

এখানেই শেষ নয়। মাথা তুলছে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা নিরাপত্তার প্রশ্নটিকে উসকে দিচ্ছে। মঙ্গলবার কালীপুজো উপলক্ষে দক্ষিণেশ্বর মন্দির চত্বরে লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। বিশেষত দক্ষিণেশ্বরের নতুন আকর্ষণ স্কাইওয়াকে জনতার ঢল আছড়ে পড়ে। তাই সোমবার থেকেই পুলিশের অতন্দ্র নজরদারি থাকার কথা ছিল সর্বত্র। স্কাইওয়াকেও। “কিন্তু এত ভিড় ও প্রহরার মধ্যেও কেউ বা কারা কীভাবে পান-গুটখার পিক ফেলে চলে গেল?” জানতে চাইছেন অনেকে। এরই সূত্র ধরে উঠে আসছে জনতার মধ্যে সার্বিক সচেতনতার অভাবের প্রসঙ্গ। অনেকে বলছেন, “মানলাম পুলিশের পক্ষে সবার উপর নজর রাখা সম্ভব নয়। কিন্তু যে পিক ফেলছে, তার পাশের মানুষটি তো দেখছেন! তিনি কেন বারণ করবেন না?” কবি সুবোধ সরকার জানান, “এরকম একটা স্কাইওয়াক বাংলার গর্ব। সেটাকে পানের বা গুটখার পিক ফেলে যারা নোংরা করেছে, তাদের ভেতরটা পচে গিয়েছে। কিছু মানুষ পচে গিয়েছে বলে তো আর উন্নয়ন বন্ধ থাকবে না। যদি অভ্যাসগতভাবে কেউ একাজ করে থাকেন, তবে তাঁর মানসিকতা বদল করা উচিত। আর কেউ বা কিছু লোক যদি ষড়যন্ত্র করে এই কাজ করেন, তবে বলতে হবে, তাঁদের ভেতরটা পচে গিয়েছে।” মঙ্গলবার দিনভর লক্ষাধিক পুণ্যার্থী এই স্কাইওয়াক দিয়ে যাতায়াত করেছেন। মন্দিরে পৌঁছেছেন সহজেই।

[কালীপুজোর উদ্বোধনে ব্রাত্য কাউন্সিলর, ক্লাবের সম্পাদকের বাড়িতে ভাঙচুর]

আড়াই বছর ধরে ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি স্কাইওয়াকটি ৩৪০ মিটার দীর্ঘ এবং ১২ মিটার চওড়া। স্কাইওয়াকে ১২টি গেট ও ১৪টি এসকালেটর ও চারটি লিফট থাকছে। এর মধ্যে দু’টি লিফট প্রতিবন্ধীদের ব্যবহারের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে। স্কাইওয়াকটি দক্ষিণেশ্বর স্টেশনের কাছে শুরু হয়ে শেষ হয়েছে মন্দিরের সিংহদুয়ারের কাছে।  
  

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement