সঞ্জীব মণ্ডল, শিলিগুড়ি: পাহাড়ে অশান্তির সময় আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে রাজি হননি বিমল গুরুং৷ তারপর থেকেই তৎকালীন মোর্চা প্রধানের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয় রাজ্য সরকারের৷ কিন্তু এবার নিজের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়াল গুরুং শিবির৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাওয়ার আবেদন জানাল তারা৷ এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে ই-মেল এবং মুখ্যসচিবের কাছে হোয়াটসঅ্যাপও করেছেন গুরুং শিবিরের অন্যতম নেতা রমেশ আলে৷ আগামী দু-একদিনের মধ্যে চিঠি পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷
পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে প্রায়শই মোর্চার আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পাহাড়৷ একটা সময় অবরোধ, বিক্ষোভ, অগ্নিকাণ্ড, বনধে জর্জরিত হয়ে গিয়েছিলেন পাহাড়ের বাসিন্দারা৷ গত বছর মোর্চার আন্দোলনে পাহাড়ে একের পর এক অশান্তি লেগেই ছিল৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে বারবারই আক্রান্ত হয়েছিলেন উর্দিধারীরা৷ প্রাণও হারিয়েছিলেন এক তরুণ পুলিশ আধিকারিক৷ এরপরই কড়া পদক্ষেপ নেয় রাজ্য সরকার৷ একের পর এক সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগে মোর্চা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে জারি হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা৷ বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু হয়৷ গ্রেপ্তারি এড়াতে বাধ্য হয়ে গা ঢাকা দেন মোর্চা সুপ্রিমো৷ পাহাড় সমস্যার সমাধান আলোচনার মাধ্যমে হওয়া সম্ভব বলেও জানায় রাজ্য৷ কিন্তু তাতেও ওই আলোচনায় অংশ নিতে রাজি হননি বিমল গুরুং৷ উন্নয়ন পর্ষদগুলি এবং রাজ্য সরকারের সঙ্গে বারবার আলোচনার পর আপাতত শান্ত পাহাড়৷
এই পরিস্থিতিতে বারবার ভিডিও বার্তার মাধ্যমে নিজের উপস্থিতি প্রমাণ করতে মরিয়া বিমল গুরুং৷ বৃহস্পতিবার পাহাড়ে সুখদিবসের ডাক দেন মোর্চা সুপ্রিমো৷ যদিও সেই অনুষ্ঠানে পাহাড়বাসীর সেভাবে সাড়া মেলেনি৷ ক্রমশই যে কোণঠাসা হয়ে যাচ্ছে, তা নিজেও বুঝতে পারছেন বিমল গুরুং৷ তাই এবার অবস্থান বদলের সিদ্ধান্ত৷ রাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় বসার আরজি জানালেন গুরুংপন্থীরা৷ ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে ই-মেল পাঠিয়েছেন তাঁরা৷ মুখ্যসচিব মলয় দে-কে হোয়াটসঅ্যাপও করেছেন গুরুংপন্থীরা৷ আগামী দু-একদিনের মধ্যে চিঠিও পাঠানো হবে বলেই জানিয়েছেন গুরুংপন্থী নেতা রমেশ আলে৷ গ্রেপ্তারি এড়াতেই কি এমন ভোলবদল গুরুংয়ের, মাথাচাড়া দিচ্ছে সেই প্রশ্নও৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.