সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: চালু হওয়ার একদিনের মধ্যেই বিপুল জনপ্রিয় হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি। জনপ্রিয়তা এতটাই যে, একই কায়দায় এবার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাও। দলের সভাপতি বিনয় তামাং একটি সর্বজনীন হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করে দিয়েছেন। তাতে জিটিএ এলাকার বাসিন্দারা নিজের সুবিধা মত যেকোনও অভাব অভিযোগ বা পরামর্শ জানাতে পারবেন। যদিও বিনয় তামাংয়ের এই উদ্যোগকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়াতে জিটিএ এবং বিনয়পন্থী মোর্চার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে একের পর এক অভিযোগের ঝড় বয়ে গিয়েছে। সে বিষয়টি কানে এসেছে মোর্চা সভাপতিরও। বিনয় বলেন, “অনেকের অনেক রকম সমস্যা বা অভিযোগ রয়েছে। সেগুলি নিয়ে যেখানে সেখানে ক্ষোভ না জানিয়ে, যেখানে জানালে কাজ হবে, সেখানে জানানো উচিত। আমরা সেই উদ্দেশ্যে এই নম্বরটি চালু করেছি।” বিনয়ের দাবি, এর আগেও জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে ই-মেল মারফত অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তাতে পরামর্শ এবং অভাব অভিযোগ, দুইই জমা পড়েছিল। ফলে পরবর্তীকালে উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করতে সুবিধা হয়। সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে পাহাড়ে অসন্তোষ তীব্র হয়েছিল। যা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা যায় এলাকাবাসীদের। তারপরই নড়েচড়ে বসে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং জিটিএ।
বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরী কটাক্ষ করে বলেন, “তৃণমূল এবং তার সহযোগী দলগুলি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে তার প্রমাণ মিলেছে। তাই এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ক্ষমতায় থাকা তৃণমূল সরকারের বদান্যতা পেতে হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথ অনুসরণ করা ছাড়া অন্য কোন গতি নেই বিনয় তামাংয়ের। তাই তাঁরা অনেকটা একই ধরণের পথ বেছে নিচ্ছেন। তৃণমূলের ক্ষেত্রেও এতে কোনও লাভ হয়নি। মোর্চার ক্ষেত্রে লাভের কোন প্রশ্নই নেই।” শিলিগুড়ির মেয়র তথা বিধায়ক সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্য এই ধরনের হোয়াটসঅ্যাপে অভিযোগ গ্রহণকে আমল দিতে চাননি। তিনি জানান, “এসব করে কোনও লাভ হবে না। প্রকৃত উন্নয়ন হয়নি তাই মানুষকে বোকা বানাতে এই ধরণের মগজ ধোলাই করানো হচ্ছে।” পাহাড়ে মোর্চার প্রধান বিরোধী জিএনএলএফের সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড বলেন, “জিটিএর অনেক ইঞ্জিনিয়াররাই কাটমানি তুলছে বলে আমাদের কাছে খবর রয়েছে। আমরা কোনও ঠিকাদারকে কাটমানি দিতে বারণ করেছি। অভিযোগ গেলেও তাতে লাভ হবে কি না, তা আমরা নিশ্চিত নই।”
অন্যদিকে সম্প্রতি পাহাড়ে ব্যপকভাবে জনসমর্থন হারিয়েছে বিনয়পন্থী মোর্চা। একটি ভাগ এখনও বিমল গুরুংকে নেতা বলে দাবি করে তাঁর আনুগত্য স্বীকার করে নিয়েছেন। একটা অংশ জিএনএলএফের দিকে ঝুঁকেছেন। ফলে লোকসভার পর বিধানসভা উপনির্বাচনেও মুখ থুবড়ে পড়েছে বিনয়পন্থীরা। এবার মুখ্যমন্ত্রীর চালু পথে মুক্তি মিলবে কি না, সেটাই প্রশ্ন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.