কিংশুক প্রামাণিক, দার্জিলিং: দার্জিলিং পুরভোটে দশটা আসনে লড়াই। দু’টিতে জয়। তিনটিতে ৩৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিল তৃণমূল (TMC)। সব মেলালে এক বিরাট সংখ্যক সমর্থন। স্বভাবতই জিটিএ নির্বাচনেও ভাল ফল করার জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি শুরু করল দল।
আর দেড়-দু’মাসের মধ্যে জিটিএ বা ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’-এর ভোট হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্মতি নেওয়ার পর নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পর্যটনের মরশুম, স্কুল-কলেজে ছুটি, পরব, আবহাওয়া ইত্যাদি সব দেখে নিয়ে ভোটের দিন নির্ধারিত হবে। দার্জিলিংয়ের দায়িত্বে থাকা তৃণমূল নেতা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বৃহস্পতিবার বলেন, “অবশ্যই আমরা জিটিএ ভোটে অংশ নেব। দার্জিলিং পুরভোটে ভাল করেছি। মাত্র দশটি আসনে লড়েছিলাম। ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত ভোট পেয়েছি। সব আসনের নিরিখে পুরভোটে দশ শতাংশ ভোট জোড়াফুল পেয়েছে। স্বভাবতই আমরা জিটিএ ভোটে ভাল ফল আশা করছি।” তবে ওই ভোটে পাহাড়ের কোনও দলের সঙ্গে সমঝোতা হবে কি না, তা এখনই কিছু ভাবেনি তৃণমূল। বাকি তিন পুরসভার ভোট জিটিএ ভোটের পর হবে। মিরিক পুরসভা (Mirik Municipality) তৃণমূলের হাতে রয়েছে।
পাহাড় সফর সেরে বৃহস্পতিবার কলকাতা ফিরে গেলেন মমতা। এই পর্ব তাঁর মূলত জনসংযোগেই কেটে গেল। চড়াই-উতরাই পথে হাঁটা, আর মানুষের কথা শোনা। সফরের ক’দিনের হিসেব ধরলে ৭০-৭৫ কিলেমিটার হেঁটেছেন মুখ্যমন্ত্রী। হাঁটতে হাঁটতে পাহাড় কী চাইছে তা বুঝে নিতে চেষ্টা করেছেন। পর্যটকদের উৎসাহ দিয়েছেন। সব জগতের মানুষের সঙ্গে কথা বলে শান্তি, উন্নয়নের প্রচার করেছেন।
এদিনও কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মেলেনি। কুয়াশার চাদরে ঢেকে ভোর হয় দার্জিলিংয়ের। সকালে যথারীতি রিচমন্ড হিল (Richmond Hill) থেকে শুরু হয় হাঁটা। সিংমারিতে রাস্তায় অঞ্জু স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেয়েরা মোমো তৈরি করছেন দেখে দাঁড়িয়ে পড়েন। এগিয়ে গিয়ে বলেন, ‘দেখি আমি বানাতে পারি কি না।’ অতীতে রাস্তায় চায়ের দোকানে গিয়ে চা করেছেন। রান্না হচ্ছে দেখে হাত লাগিয়েছেন। এবার নতুন পরীক্ষা। বেলন হাতে নিয়ে লেচি বেলে তার মধ্যে পুর দিয়ে টিপে টিপে মোমো তৈরি করতে হয়। সবাইকে অবাক করে সুনিপুণ হাতে তা বানিয়ে ফেলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেয়েদের কাজে উৎসাহ দিতেই আমি মোমো বানালাম।’
বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে জেলাশাসককে নির্দেশ দেন কীভাবে গোষ্ঠীর মেয়েদের আরও বেশি কাজে লাগানো যায় তা দেখতে। পরে উদ্যোগপতি সত্যম রায়চৌধুরির হোটেল গিয়ে ‘ক্যাফে হাউসে’র কাজ কোথায় হবে তা পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। ইন্দ্রনীল সেনকে থিম সংটি তৈরি করে দিয়েছেন। পর্যটন মন্ত্রী সেটি গেয়ে শোনান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.