দেব গোস্বামী, বোলপুর: গরু পাচার মামলায় ২০২২ সালে পুজোর আগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের হাতে। মাঝে কেটে গিয়েছে দু-দুটি দুর্গাপুজো। কর্তাহীন বাড়িতে নম নম করে মা দুর্গার আবাহন-বিসর্জন হলেও প্রাণ ছিল না তাতে। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। দুবছর ১ মাস পর জামিন পেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। পুজোর আগেই ফিরছেন জেলায়। আর ঘরের ছেলের ঘরে ফেরার আনন্দে এবার গ্রামের বাড়ির দুর্গোৎসবের (Gramer Durga Puja) আয়োজন হচ্ছে মহা ধুমধাম করে।
নানুরের হাটসেরান্দি গ্রামে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি। এখানকার মোড়ল বাড়ির দুর্গাপুজোর কর্তা অনুব্রত মণ্ডল। শুক্রবার বিকালে জামিনে তিনি তিহাড় জেল থেকে মুক্তি পাচ্ছেন – এই খবর পৌঁছনোমাত্রই গ্রামে নতুন উদ্যমে শুরু হয়ে গিয়েছে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি। দুবছর আগে তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর পারিবারিক দুর্গাপুজো জৌলুস হারিয়েছিল। নিয়মমাফিক পুজোর আয়োজন হলেও মনমরা ছিল গোটা পরিবার। এবার অনুব্রতর জামিন মঞ্জুরের খবর পৌঁছনোমাত্রই হারানো আনন্দ ফিরে এসেছে এবারের পুজোয়। হাটসেরান্দি গ্রামের বাড়িতে দুর্গা মন্দির রয়েছে, আদি পুজো হয় এখানে৷ দুর্গা মন্দিরের বাইরে রয়েছে শিব মন্দিরও৷ অনুব্রতর ভাই প্রিয়ব্রত মণ্ডলের কথায়, “মণ্ডল পরিবারের সকলেই দুর্গাপুজোর উন্মাদনায় মেতেছেন। দুবছর ভাইঝি সুকন্যা এবং দাদা অনুব্রতকে ছাড়াই নিয়ম রক্ষায় পুজো করতে হয়েছে। তবে এবারে তিহাড় জেল থেকে তিনি মুক্ত হওয়ায় গ্রামবাসী-সহ মণ্ডল পরিবারের উৎসাহ-উদ্দীপনা অন্যরকম।”
অনুব্রত মণ্ডল ঢেলে সাজিয়েছিলেন তাঁর গ্রামকে। চারদিন সেই গ্রামের বাড়িতে থেকেই ধুমধাম করে দুর্গাপুজো করতেন। পুজোয় নতুন জামাকাপড়ও দিতেন গ্রামবাসীদের। শুনতেন তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার কথা। অনুব্রতর বাবার দাদু ওপার বাংলা থেকে এসেছিলেন নানুর ব্লকের হাটসেরান্দিতে। তার পর সেখানেই শুরু হয় তাঁদের বসবাস। মণ্ডল পরিবার সূত্রেই এই গ্রামে প্রথম দুর্গাপুজো শুরু হয়। ওপার বাংলা থেকে চলে আসা সেই দুর্গাপুজো দেখতে দেখতে পার করে ফেলেছে সাড়ে তিনশো বছর। শুধু হাটসেরান্দিতে পুজোর বয়সই হল ১৪২ বছর। অনুব্রতর ভাইঝি পম্পি মণ্ডল বলছেন জানান, “জেঠু এবং বোন ফিরছে পুজোয় অংশ নেবে জেনে আমরা সকলেই আনন্দিত।” এবারের পুজোয় জাঁকজমক ফিরবে নানুর হাটসেরান্দিতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.