সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: স্নানঘাটের টাকায় মন্দির! লকডাউনে আজব কাণ্ড বিজেপি পরিচালিত মাঠা গ্রাম পঞ্চায়েতের। তাও আবার রায়তি জমিতে। পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডি ব্লকের মাঠা গ্রাম পঞ্চায়েতের পঁড়া গ্রামে শাঁকা নদী থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে স্নানের ঘাট হিসাবে মন্দিরের মতো ঘর তৈরি করে বিতর্কে জড়িয়েছে বিজেপি পরিচালিত ওই গ্রাম পঞ্চায়েত। তবে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিযোগ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওই কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়টি পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে আসতেই বাঘমুন্ডির বিডিওকে তদন্ত করতে বলেছেন। সভাধিপতির কথায়, “ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক কীভাবে এই কাজের অনুমোদন দিলেন? আমি বিডিওকে তদন্ত করতে বলেছি।”
ওই গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রেই জানা গিয়েছে, চতুর্দশ অর্থ কমিশনের প্রায় দেড় লাখ টাকায় রায়তি জমির ১০৪৮ নম্বর প্লটে ওই নির্মাণ কাজ হয়েছে। এই বিষয়ে ওই জমির মালিকরা গত ১৫ মে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের এক্সিকিউটিভ অ্যাসিন্ট্যান্টের কাছে অভিযোগ করেন। জমির মালিক অক্ষয় গরাই, পান্ডব গরাই বলেন, “দীর্ঘ লকডাউনে সবাই ঘরবন্দি। এই সুযোগে শাঁকা নদীর কাছে থাকা আমাদের জমির ওপর স্নানঘাটের টাকায় মন্দিরের মত দেখতে একটি ঘর তৈরি করে দিয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত। তবুও লকডাউনের মধ্যে আমরা খবর পাওয়া মাত্রই বাধা দিই। কিন্তু কোনও কথা শোনেনি। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে অভিযোগ করতে গেলেও তিনি অভিযোগ নেননি। ফলে আধিকারিকদের কাছে অভিযোগ করেছি।”
এই ঘটনায় তারা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের দিকেও আঙুল তোলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্নানঘাট নদী বা পুকুর ঘেঁষে তৈরি হবে। কিন্তু এখানে নদী থেকে কিছুটা দূরে ফাঁকা জায়গায় মন্দিরের মত করে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। আবার তৈরি হয়েছে সিঁড়িও। মন্দিরের আদলে ওই নির্মাণ কাজে আবার লেখা রয়েছে, “কনস্ট্রাকশন অফ বাথিং ঘাট অফ শাঁকা নদী অ্যাট পঁড়া।” সেই সঙ্গে লেখা আছে কোন প্রকল্পের কত টাকা ব্যয়ে এই নির্মাণ কাজ হয়েছে। এদিন গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপির প্রধান ভারতী হাঁসদাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। বাঘমুন্ডির বিডিও উৎপল উৎপল দাস মোহরি বলেন, “গুরুতর অভিযোগ। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
ছবি- অমিত সিং দেও
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.