দীপঙ্কর মণ্ডল: শাঁখের করাত বোধহয় একেই বলে। একদিকে প্রত্যাখ্যান, অন্যদিকে প্রত্যাশা। এই দু’য়ের মাঝে পড়ে ইসলামপুরের অন্যান্য স্কুল-কলেজে আকাল সত্ত্বেও উর্দু শিক্ষক পাঠাতে পারছে না রাজ্য সরকার। উত্তর দিনাজপুরের এই জনপদে বাংলার পাশাপাশি উর্দু অত্যন্ত জনপ্রিয়। ইসলামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং কলেজে ব্যাপক চাহিদা উর্দু শিক্ষকের। কিন্তু এই এলাকাতেই উর্দু শিক্ষক নিয়োগের প্রতিবাদে প্রাণ হারিয়েছে দুই কিশোর ছাত্র। ফলে সাবধানী রাজ্য৷
[ভাইফোঁটার আগে পথভোলা বোনকে বাড়ি ফেরাল হাসপাতাল]
দাড়িভিট স্কুলে উর্দু এবং সংস্কৃতের শিক্ষক নিয়োগের বিরোধিতা করে আন্দোলন হয়। ২০ সেপ্টেম্বর উত্তাল হয় ওই স্কুল চত্বর। রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণ নামে ওই স্কুলের দুই প্রাক্তনী গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারায়। কে বা কারা গুলি চালিয়েছিল তা নিয়ে তদন্ত করছে সিআইডি। একমাসেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত, কিন্তু এখনও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ। স্কুলশিক্ষা দপ্তর ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, দাড়িভিট স্কুলে উচ্চ-মাধ্যমিকস্তরে উর্দু এবং সংস্কৃতের শূন্যপদ ছিল না। বেআইনিভাবে নিয়োগ হচ্ছিল। এক মাস পরেও বন্ধ স্কুল খোলা নিয়ে জট অব্যাহত। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পুজোর ছুটির পর সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে স্কুল খোলার বিষয়ে সমাধান সূত্র মিলবে। দাড়িভিটে উর্দু প্রত্যাখ্যানের পাশাপাশি একই মহকুমা এলাকায় উর্দুর জন্য প্রত্যাশার চাপও আছে। স্কুলশিক্ষা দপ্তর জানিয়েছে, ইসলামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে উর্দু শিক্ষক চেয়ে আবেদন জমা পড়েছে। এমনকী মাস দু’য়েক আগে উর্দু শিক্ষক চেয়ে ওই স্কুলের ছাত্ররা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছে। দাড়িভিটের মতো তীব্র না হলেও সেই আন্দোলনও জোরালো আকার নিয়েছিল। উর্দু শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে ফের আন্দোলন হতে পারে বলে খবর এসেছে। দাড়িভিট-কাণ্ডের পর উর্দু শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে তাড়াহুড়ো চাইছে না সরকার। জানা গিয়েছে, ইসলামপুরে আপাতত উর্দু শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত থাকবে।
[পরকীয়ায় মজে যুবক-যুবতী, বিয়ে দিয়ে দিলেন গ্রামবাসীরাই]
ইসলামপুর কলেজে উর্দু অনার্সের ব্যাপক চাহিদা। এখন আসন সংখ্যা ৮১। ছাত্রছাত্রীদের চাহিদা এতটাই বেশি যে, উর্দু অনার্সে আরও ৪০টি আসন বাড়াতে চায় কলেজ কর্তৃপক্ষ। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজল রঞ্জন বিশ্বাস উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে চিঠিও দিয়েছেন। উর্দুতে এখন সাধারণ ও সাম্মানিকস্তরে স্নাতক পড়ানো হয়। স্নাতকোত্তর খোলার বিষয়েও লিখিত আবেদন এসেছে উচ্চশিক্ষা দপ্তরে। এই কলেজে চারজন উর্দুর শিক্ষক আছেন। তিনজন আংশিক সময়ের। একজন অতিথি। স্থায়ী শিক্ষক পদ আছে চারটি। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, কলেজ সার্ভিস কমিশনকে শূন্যপদের কথা জানানো হয়েছে। স্থানীয় বিধায়ক তথা ইসলামপুর কলেজের পরিচালন সমিতির সম্পাদক কানাইলাল আগরওয়াল জানিয়েছেন, “আমাদের এলাকায় উর্দুর চাহিদা আছে। স্কুল এবং কলেজে এই ভাষার শিক্ষকের অভাবও আছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যর সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা জানিয়েছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.