নিজস্ব সংবাদদাতা, বর্ধমান: রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (C V Ananda Bose) ও রাজ্য সরকারের (Governor) সংঘাতের আঁচ এবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে (Burdwan University)। তৃণমূলপন্থী শিক্ষক সংগঠন ও পড়ুয়াদের আন্দোলনের জেরে ভেস্তে গেল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠক।
শুক্রবার পড়ুয়ারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ দেখান। এরফলে উপাচার্য-সহ অন্যরা আটকে পড়েন। তৃণমূলপন্থী শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার অভিযোগ, রাজ্য সরকারের নির্দেশ না মেনে এই বৈঠক করা হচ্ছিল। এদিন দুপুর ১২টা থেকে এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছিল। পরে উপাচার্যের নির্দেশে সেই বৈঠক এগিয়ে আনা হয়। বৈঠক শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে। এদিন উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছলেই তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা।
উপাচার্যের দপ্তরের মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। পাশাপাশি, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতি ও শিক্ষক সংগঠনের একাংশও এই বৈঠকের বিরোধিতা করেন। উপাচার্য-সহ অন্যান্যরা ঘণ্টা দুই আটকে ছিলেন। পরে তালা খুলে নেওয়া হয়। তৃণমূলপন্থী (TMC) শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১ এপ্রিল থেকে জারি হওয়া রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুসারে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কোনও অন্তর্বর্তী কমিটির বৈঠকের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবু বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ৫ এপ্রিল এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে।
রাজ্য সরকারের নির্দেশ অমান্য করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই বৈঠক ডেকেছে। উপাচার্য গৌতম চন্দ্র বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্যেই এই বৈঠক জরুরি ছিল। সেই কারণেই এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্যদের এই বৈঠকে এসেছিলেন। পড়ুয়াদের স্বার্থেই এই বৈঠক কার্যকর হত।’’
ওয়েবকুপার সদস্য সৌরভ মধুর দে বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের স্বার্থে বৈঠকের কথা বলছেন উপাচার্য। কিন্তু রাজ্যে সরকারের নির্দেশ না মেনে বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত পরবর্তীকালে বাতিল করা হলে পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়বেন। এছাড়া এই ধরনের সিদ্ধান্ত উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে অগ্রাহ্য করার সমান। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্ত বৈঠক স্থগিত রাখার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে।’’
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ করছেন না। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হয়নি। রাজ্য সরকারের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠক স্থগিত রাখার নির্দেশ দেওয়ার পরেও এখানে বৈঠক ডাকা হয়েছে। তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছি।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.