সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাল মাটির দেশে সংস্কৃতির চর্চার দিন বিগত, এখন স্রেফ বোমা তৈরির কারখানা হিসেবে বীরভূমের নাম ছড়িয়ে পড়েছে। বুধবার বোলপুরের শ্রীনিকেতনে হলকর্ষণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে এভাবেই বীরভূমকে নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুকৌশলে আক্রমণ শানালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। এই মন্তব্য রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান সুলভ নয়, বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতার মতো। পালটা প্রতিক্রিয়া জেলা তৃণমূলের। ওইদিন রাজ্যপালকের উপস্থিতির বিরোধিতা করে বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসে দেখা গেল ‘গো-ব্যাক’ পোস্টারও।
বুধবার শ্রীনিকেতনে হলকর্ষণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সস্ত্রীক তিনি সেখানে যান। অনুষ্ঠানের রীতি মেনে মাঠে হাল চালিয়ে, প্রতীকী বীজ রোপণ করেন রাজ্যপাল।
এরপর মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়েই তিনি রাজ্যের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তোলেন। বিশেষত বীরভূমের বিক্ষিপ্ত জায়গায় রাজনৈতিক অশান্তির পরিস্থিতিকেই তিনি গোটা জেলার বলে মনে করছেন। তাঁর মন্তব্য, ”বীরভূমে বোমা তৈরি ফ্যাক্টারি রয়েছে, গবাদি পশু এই জেলা হয়ে পাচার হচ্ছে। মাফিয়ারাজ বীরভূমের পরিচিতি হতে পারে না।”
এছাড়া রাজ্যের কৃষকদের সমস্যা নিয়েও সরব হন তিনি। এ নিয়ে রাজ্যপালের বক্তব্য, ”রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই কৃষকদের কথা ভেবে ছিলেন। প্রতি বছর রাজ্যের ৭০ লক্ষ কৃষক ৪২০০ কোটি টাকা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। গত দু’বছরে এর পরিমাণ প্রায় ৪৮০০কোটি টাকা। কেন্দ্র ৩ লক্ষ কোটি টাকার প্যকেজ ঘোষণা করেছে কৃষকদের জন্য। কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যে ৩ শতাংশ সুদে এই টাকা পাওয়ার কথা কৃষকেরা, কিন্তু রাজ্যের কৃষকরা তা পাচ্ছে না।”
তবে রাজ্যপালের এসব বক্তব্যকে মোটেই ভাল চোখে দেখেনি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব এবং বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের একাংশ। এদিন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে তাঁর বিরোধিতায় ‘গো-ব্যাক’ পোস্টার পড়ে। তাতে স্পষ্ট লেখা, ‘বেরিয়ে যান’। তাঁকে ‘বিজেপির দালাল’ বলেও পোস্টার লেখা হয়।
এমনিতেই রাজ্যের সঙ্গে নানা খুঁটিনাটি বিষয়ে রাজ্যপালের সংঘাত নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। এখন বীরভূমের মতো বিশ্ববরেণ্য কবির কর্মস্থলে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেও তাঁর এ ধরনের রাজনৈতিক মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক উঠেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.