কাউন্সিলরদের কড়া বার্তা শিলিগুড়ির মেয়রের। নিজস্ব চিত্র।
অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: শহরে ফিরেই তড়িঘড়ি বৈঠকে বসলেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। প্রথমে পুরনিগমে কমিশনারের সঙ্গে পরে পূর্তদপ্তরের বাংলোতে কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক সারেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে পুরনিগমের কাজে সন্তুষ্ট নয় তা সকলকে আরও একবার জানিয়ে দেন মেয়র। তাঁর নির্দেশ, মানুষের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জনসংযোগ রেখে কাজ করতে হবে। প্রতিটি মানুষের প্রয়োজন মেটাতে হবে। তবে খরচ কমানোর দিকে জোর দিচ্ছে পুরনিগম পাশাপাশি বুধবার থেকেই শহরের ফুটপাথ উদ্ধারে হকার উচ্ছেদ শুরু করা হবে।
কলকাতায় নবান্নের বৈঠকে পাশমার্কও পায়নি পুরনিগম। পানীয় জল পরিষেবা নিয়ে ভর্ৎসনা করার পাশাপাশি জমি মাফিয়াদের সক্রিয়তা নিয়েও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরেই শিলিগুড়িতে এসে তৃণমূলের ৩৭ জন কাউন্সিলরকে বৈঠকে ডাকেন তিনি। দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করে সকলকেই মেয়র স্পষ্ট বার্তা দেন কাজ করতে হবে রাস্তায় নেমে। আরও বেশি করে মানুষের কাছে যেতে হবে। সব বিভাগে সেরা হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। পাশাপাশি তিনি সকলকে বলে দেন খরচ কমানোর দিকে নজর দিতে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে রাস্তা দখল হয়ে যাচ্ছে। হাইড্রেন দখল করে দোকান বসে যাচ্ছে সেদিকে নজর রাখতে হবে। এগুলো হতে দিলে চলবে না, বাইরে থেকে লোক এসে বসে যাচ্ছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের পর মেয়র পারিষদ রদবদল হওয়ার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। যারা পদ পেয়েও নিজের দায়িত্ব পূরণ করেনি তাদের সরিয়ে নতুন কাউন্সিলরদের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। যদিও এবিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন মেয়র থেকে কাউন্সিলর সকলেই। মেয়র বলেন, “এবিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। এটা আমার কাজও না।”
এদিকে মেয়র গৌতম দেব বৈঠক শেষে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যা নির্দেশ দিয়েছেন তা মেনেই কাজের আরও গতি বাড়ানো হবে। পানীয় জলের সমস্যা নতুন নয়। আমরা একটি বড় জল প্রকল্পের কাজ করছি তা মুখ্যমন্ত্রীর সহযোগিতায়। এছাড়া আমরা আরও একটি জলাশয় তৈরি করছি। কারণ বর্ষার সময় তিস্তার জলে মাটি, কাদা-সহ অনেক কিছু ভেসে আসে। তা ফিল্টার করে পরিষ্কার করার জন্য জলাশয়ের প্রয়োজন। তবে জল নিয়ে ৭ জুলাই জেলাশাসকের সঙ্গেও কথা বলব।” এদিকে খরচ কমানোর দিকে জোর দিচ্ছে পুরনিগম।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, অযথা দিনভর আলো জ্বললে সেই পুরসভাকে কোনও সাহায্য নয়। তাই এবার সোলার প্ল্যান্ট বসাতে চলেছে পুরনিগম। মেয়র বলেন, “বিদ্যুৎ এর খরচ কমাতে আমরা শহরে এলইডি আলো লাগিয়েছি। কিছু বাকি রয়েছে সেগুলোও করে ফেলা হবে। এছাড়া বোরোগুলোতে সোলার প্ল্যান্ট লাগানো হবে। কিরণচন্দ্র শ্মশানেও সোলার প্ল্যান্ট লাগানো হবে।” শহরের প্রায় সব রাস্তায় হকার বসে ফুটপাথ দখল করেছে। মানুষের হাঁটার জায়গা নেই। তাই বুধবার থেকেই এদের সরানোর কাজ শুরু করা হবে। এ বিষয়ে মেয়র গৌতম দেব বলেন, “এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে। যারা এভাবে বসেছেন তাদের সরিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া গাড়ি রাখার জন্য পার্কিং তৈরি করা হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.