সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুষ্কৃতীদের হুমকির মুখে পড়লেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী গৌরাঙ্গ কুইল্যা। বাড়িতে ঢুকে রীতিমতো শাসানো হয় তাঁকে। ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হবেন শিল্পী।
কলকাতার দুর্গাপুজোর অত্যন্ত পরিচিত একটি নাম গৌরাঙ্গ কুইল্যা। প্রতিবারই নিজের সৃজনশীলনতা দিয়ে দর্শনার্থীদের মন ভরান তিনি। গত দুর্গাপুজোতেও কলকাতার বুকে আস্ত আন্দামান তৈরি করে অবাক করেছিলেন। সেই শিল্পীকে নিজের এলাকাতেই হুমকির মুখে পড়তে হল গত ২৩ ডিসেম্বর।
কেন ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হল তাঁকে? আসলে এটি একদিনের ঘটনা নয়। দীর্ঘদিন ধরে শব্দদূষণের বিরুদ্ধে নিজের এলাকায় সক্রিয় তিনি। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের নন্দকুমার থানা এলাকায় পুজো পার্বণ থেকে যে কোনও অনুষ্ঠানে তারস্বরে গান বাজে। গান বললে অবশ্য ভুল বলা হয়। শিল্পী জানাচ্ছেন, যে কোনও গানের সঙ্গে কিছু অশ্লীল শব্দ এবং লাউড মিউজিক জুড়ে তার রিমিক্স তৈরি করে সেগুলিই চালিয়ে দেন ডিজেরা। যা কানকে কষ্ট দেওয়া ছাড়া আর কোনও কাজেই লাগে না। আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রায় ৩৬৫ দিনই রাত ১২টার পরও লাউড স্পিকারে মিউজিক বাজে। কখনও কখনও রাত দুটো-তিনটে পর্যন্তও মাইকের বিকট শব্দে কাঁপতে থাকে পাড়া। মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার দিনগুলোতেও যার বিরাম নেই। এর বিরুদ্ধে সরব হতে ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর বেটার লিভিং’ নামের একটি সংগঠনও তৈরি করা হয়েছে। যেখানে শিল্পীর সঙ্গে রয়েছেন এলাকার সংস্কৃতি প্রিয়, শুভবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তিরা।
কাঁথিতেও একই সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তবে কাঁথি পৌরসভার উদ্যোগে সেই এলাকায় রাতে লাউড স্পিকারে গান বাজানো বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু বদলায়নি তমলুকের ছবিটা। পুলিশ-প্রশাসনের উদাসীনতাতেই পরিস্থিতি বদলাচ্ছে না কোনওভাবেই। এমনকী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হয়েছিল। তিনিও শব্দদূষণের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু আখেরে কোনও লাভ হয়নি। ডিজের ‘অত্যাচার’ যেমন চলছিল, তেমনই চলছে। দিন কয়েক আগেই ফের একটি অনুষ্ঠানে মধ্যরাত পর্যন্ত মাইকে ডিজে মিউজিক বাজানোর প্রতিবাদ করেছিলেন শিল্পী। তারপরই হুমকির মুখে পড়তে হয় তাঁকে। এরই প্রতিবাদে নন্দকুমার থানা এলাকায় রবিবার একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করবেন শিল্পী ও সংগঠনের অন্যান্যরা। শিল্পীর প্রশ্ন, ‘এত আন্দোলনের পরও কি কোনও সুরাহা হবে না?’ উত্তর অধরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.