রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: “মা আমি ফেঁসে গিয়েছি”, শিব চুতর্দশীর দিন শেষবার গ্রামের বাড়িতে এসে মাকে একথাই বলেছিলেন নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে নাম জড়ানো গোপাল দলপতি৷ শিব চতুর্দশীর রাতে ছেলে গোপাল বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়। তার মধ্যে ব্যস্ততাও ছিল চোখে পড়ার মতো। মায়ের চোখেও তা ধরা পড়েছিল। তখনই ছেলের কাছে মা লক্ষ্মী দলপতি জানতে চেয়েছিলেন, ‘‘তোর নামে এসব কি শুনছি?’’ জবাবে গোপাল বলেছিলেন, ‘‘মা আমি ফেঁসে গিয়েছি’’৷ তাঁকে কারা কীভাবে ফাঁসিয়েছে তা অবশ্য সেদিন স্পষ্ট করেননি গোপাল৷
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর দুই ব্লকের গড়বাড়ি দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের খিরিশবাড়ি গ্রামে রয়েছে গোপাল দলপতির আদি বাড়ি। গোপালের গ্রামের বাড়িতে মা লক্ষ্মী ছাড়া কেউ থাকেন না। শুক্রবার সকালে লক্ষ্মীদেবী জানান, ‘‘আমার ছেলে নির্দোষ৷ তাপস মণ্ডল ও কুন্তল ঘোষকে চিনি না৷’’ লক্ষ্মীদেবী জানিয়েছেন, পূর্ব মেদিনীপুরের এই বাড়িতেই গোপালের বেড়ে ওঠা। তবে আনুমানিক তিন দশক আগে সে হাওড়ায় চলে যায়৷ গোপালের নিজের পরিবার এখানে থাকে না৷ তবে লক্ষ্মীদেবীর পাশাপাশি পৈতৃক ভিটেতে থাকতেন গোপালের জেঠুর ছেলে ও তাঁর পরিবার৷ গত কয়েকদিন ধরে তাঁদেরও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। পুরো বাড়িতে কেউ নেই।
ফাঁকা একতলা বাড়িতে বসে রয়েছেন গোপাল দলপতির মা৷ বলেছিলেন, ‘‘ছেলে শিব চতুর্দশীর দিন এসেছিল। পরের দিন দুপুরে কলকাতায় ফিরেছে। গোপাল কলকাতায় ফিরে যাওয়ার পর এক ব্যক্তি খুব জরুরি বলে একটা চিঠি দিয়ে গিয়েছিল। সেই কাগজের সারবত্তা কী তা আমার জানা নেই।” কিন্তু ছেলের সঙ্গে প্রতিদিন কথা হয় মা লক্ষ্মীর। কারা কারা বাড়িতে আসছে সে বিষয়ে খোঁজখবরও নেন গোপাল।
একই সঙ্গে তিনি জানান, ফোনে খামের কথা জানানোয় পরের দিন রাতে গ্রামের বাড়িতে এসে ছেলে গোপাল সেই খাম নিয়ে যায়৷ বাড়ির বারান্দায় বসে তিনি বলেন, ‘‘টিভিতে যে সব দেখানো হচ্ছে তা ঠিক নয়৷ আমার ছেলে নির্দোষ৷ ওকে ফাঁসানো হচ্ছে৷ ছেলের কাছে টাকা নেই৷ যা আছে তাপস মণ্ডল ও কুন্তলের কাছে আছে৷’’ নিজের দাবির স্বপক্ষে তাঁর জোরালো যুক্তি, ‘‘আমাদের কাছে যদি টাকা থাকত এই বাড়িটি আরও সুন্দর করে তুলতে পারতাম!’’
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.