সৌরভ মাজি, বর্ধমান: ‘হ্যালো, ম্যাঁয় অভিষেক যাদব। উত্তরপ্রদেশ কী ফেতপুর সে বোল রাহা হু। মেরা নাম নেহি লিস্ট মে।’ ‘হ্যালো, ম্যাঁয় বিহারকে ছাপড়া সে বিজয় সাক্সেনা। মেরে পাপা কা নাম নেহি ভোটার লিস্ট মে।’ ‘হ্যালো। আমি রায়গঞ্জ থেকে সুদীপ্ত সাহা বলছি। আমাদের এখানে জোর করে দেওয়াল লিখন মুছে দেওয়া হচ্ছে।’ দিনভর এমন অদ্ভুত ফোন কল আসছে পূর্ব বর্ধমান জেলার নির্বাচন সংক্রান্ত টোল ফ্রি নম্বরের কল সেন্টার বা কন্ট্রোল রুমে। রাজ্যের অন্য জেলার তো বটেই অন্য রাজ্য থেকেই ১৯৫০ টোল ফ্রি নম্বরে ফোন আসায় নাজেহাল হচ্ছেন কর্মীরা। পরামর্শ দিতে বা অভিযোগ নথিভুক্তকরণের ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়ছেন তাঁরা। ওই সব জায়গার বিষয়ে তাঁদের কোনও এক্তিয়ারই যে নেই।
নির্বাচন সংক্রান্ত যে কোনও অভিযোগ জানাতে টোল ফ্রি নম্বর চালু করেছে নির্বাচন কমিশন। ১৯৫০ নম্বরে ফোন করলেই সংশ্লিষ্ট জেলার কল সেন্টার বা কন্ট্রোল রুমে তা পৌঁছে যাওয়ার কথা। সেখানেই জানানো যায় অভিযোগ। বর্ধমানে জেলাশাসকের দপ্তরে ছ’তলায় খোলা হয়েছে কল সেন্টার। সেখানে অন্য জেলা ও ভিন রাজ্য থেকে দিনে কমপক্ষে খানপাঁচেক ফোন আসছে। কিন্ত এমনটা তো হওয়ার কথা নয়। সারা দেশে একই নম্বরের টোল ফ্রি নম্বর চালু করা হয়েছে। নিয়মানুযায়ী সংশ্লিষ্ট জেলার ফোন কলগুলিই সেই জেলার কল সেন্টারে যাওয়ার কথা। বাস্তবে তা ঘটছে না।
দিনভর এমন ফোন কল পেয়ে সমস্যা হচ্ছে কর্মীদের। তাঁরা বিকল্প ব্যবস্থাও করে নিচ্ছেন। কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর বা অন্য কোনও জেলা থেকে ফোন এলে তাঁরা সংশ্লিষ্ট জেলার নির্বাচনী আধিকারিক (ওসি ইলেকশন)-এর ফোন নম্বর জানিয়ে দিচ্ছেন। সেই নম্বরে যোগাযোগ করতে বলছেন। কেন না পূর্ব বর্ধমান থেকে অন্য জেলার সমস্যার সমাধান করা বা পদক্ষেপ করার নিয়ম নেই। বর্ধমানের কল সেন্টারে রাজ্যের সব ওসি ইলেকশনের নম্বর নোট করে রেখেছেন কর্মীরা। অন্য জেলার ফোন এলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সেই জেলার নম্বর দিয়ে অভিযোগ জানাতে বলছেন।
কিন্তু এমন সমস্যা তো হওয়ার কথা নয়। যে জেলার ফোন নম্বর সেই জেলার কন্ট্রোল রুমেই তা যাওয়ার কথা। তাহলে কেন এমনটা হচ্ছে? তার উত্তর জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের কাছেও নেই। জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক অনুরাগ শ্রীবাস্তব শুক্রবার বলেন, “বিএসএনএলের মাধ্যমে টোল ফ্রি নম্বর কার্যকরী হয়েছে। তারাই যে জেলার ফোন সেই জেলায় পাঠায়। বিশেষ কারিগরি ব্যবস্থা তারাই করেছে। এমনটা ঘটে থাকলে বিএসএনএলের কোনও যান্ত্রিক সমস্যা হয়ে থাকতে পারে। আমি খোঁজ নিচ্ছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.