সঞ্জীব মণ্ডল, শিলিগুড়ি: এ যেন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন তীব্র করে পাহাড় থেকে সুবাস ঘিসিংকে কার্যত তাড়িয়েছিলেন বিমল গুরুং। তিনি হয়েই ওঠেছিলেন পাহাড়ের শেষ কথা। তবে এবার পাহাড় মানে আর ওনলি বিমল নয়। অজ্ঞাতবাসে থাকা মোর্চা সুপ্রিমো কি কার্যত গুরুত্বহীন করে দিলেন একদা তাঁরই সহযোগী বিনয় তামাং। এই প্রশ্ন ঘুরছে পাহাড়জুড়ে। মোর্চার প্রতিষ্ঠা দিবসের দখল নিয়ে ফেলে বিনয় অনুগামীরা। পাহাড়ে মোর্চার একাধিক পার্টি অফিস তারা দখল করল। সরিয়ে দিল বিমল গুরুংয়ের সমস্ত ছবি, হোর্ডিং। প্রকারন্তরে বিনয় তামাং বুঝিয়ে দিলেন বিমল এবার ইতিহাস হতে বসেছে।
[জিএসটি চালু হলেও এক পয়সাও কর দেননি ২২ লক্ষ ব্যবসায়ী]
ক্ষমতা যার, অনুগামী তার। এই ফর্মুলার সফল প্রয়োগ দেখল পাহাড়। জিটিএর শীর্ষ পদে বিনয় তামাং আসার পর থেকে দার্জিলিংয়ের রাজনৈতিক সমীকরণ দ্রুত বদলাতে থাকে। বিমল গুরুং অন্তরালে থাকায় বিনয় তামাং দ্রুত ময়দান দখল করে নেন। তার ফলশ্রুতিতে একের পর এক প্রথম সারির মোর্চা নেতা শিবির বদলাতে থাকেন। এমনকী বিধায়করাও গুরুংকে ছেড়ে বিনয়ের দিকে ঝুঁকেছেন। এই আবহে বিমল গুরুংকে আরও গুরুত্বহীন করে দিলেন বিনয় তামাং। শনিবার ছিল মোর্চার একাদশ প্রতিষ্ঠা দিবস। ৭ অক্টোবর পাহাড়ে এই দিনটি পালনের জন্য অনুগামীদের অডিও বার্তা দিয়েছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান। দল থেকে বহিষ্কৃত হলেও বিনয় তামাং দাবি করেছিলেন তিনিই আসল মোর্চা। সেই প্রমাণ দিতে তাঁর অনুগামীরা এদিন সকাল থেকে নেমে পড়েন। কালিম্পং, কার্শিয়াংয়ের মোর্চার একাধিক পার্টি অফিস থেকে তারা বিমল গুরুংয়ের ছবি, ছবি সম্বলিত ব্যানার সরিয়ে দেন। বিমলপন্থীরা এর প্রতিবাদ জানালেও পিছু হটতে বাধ্য হন। দার্জিলিং মোটরস্ট্যান্ডের কাছে মোর্চার প্রতিষ্ঠা দিবস পালনের সময় বিনয় তামাং বুঝিয়ে দেন বিমল এখন অতীত। বিনয়ের দাবি পাহাড়ে জনগণের সঙ্গে তিনি আছেন। গোর্খাল্যান্ডের জন্য অহিংসপথে আন্দোলন জারি থাকবে। পাহাড়ে বনধের জায়গা নেই। বিমল গুরুং কেন সামনে এসে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
[টিকিট কই! যুবভারতীতে ইতিহাসের সাক্ষী থাকতে মুখিয়ে গোটা বাংলা]
নবান্নে বৈঠকের পরই বিনয় তামাং ও অনীত থাপাকে বহিষ্কার করেছিলেন বিমল গুরুং। তারপরই বিনয়কে পাহাড়ের নবগঠিত বোর্ডের চেয়ারম্যান করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনীত থাপাকে ডেপুটির দায়িত্ব দেন। শনিবারের বারবেলায় দুই নেতা বুঝিয়ে দিলেন ইতিহাস এভাবেই ফিরে আসে। তবে গুরুংয়ের সমস্ত চিহ্ন মুছে দেওয়ার চেষ্টা হলেও কি মোর্চা সুপ্রিমোকে গুরুত্বহীন করে দেওয়া যাবে। এর উত্তরই খুঁজছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.