সৌরভ মাজি, বর্ধমান: সাড়ে তিন বছরের প্রেম। প্রেমিকা চুমকি সদ্য একটা কাজও পেয়েছেন। প্রেমিক সুশান্তর অবশ্য এখনও সেভাবে রোজগার নেই। তাই বিয়ের পথে অন্তরায় হয়েছিল প্রেমিকের আর্থিক অসচ্ছ্বলতা। শেষ পর্যন্ত সাড়ে তিরিশ ঘণ্টার ধরনার পর প্রেমিককেই স্বামী হিসেবে পেলেন চুমকি। শুক্রবার চুমকি-সুশান্তর প্রেমকথার সাক্ষী রইল পূর্ব বর্ধমানের মেমারির পাল্লারোড। সেখানেই একটি ক্লাবের উদ্যোগে চুমকি-সুশান্তর চার হাত এক করা হয়। কালীমন্দিরে দেবীকে সাক্ষী রেখে হয় সিঁদুরদান আর আইন মেনে রেজিস্ট্রি করেও হয় বিয়ে।
মেমারির পাল্লারোডের মামুদপুর গ্রামের কার্তিক দাসের ছেলে সুশান্ত। আর জামালপুর থানার খরদাপলাশি গ্রামের পাঁচু মুদির মেয়ে চুমকি। প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক। দুই পরিবার তা জানতও। চুমকির পরিবারের কোনও আপত্তি ছিল না সুশান্তর সঙ্গে বিয়েতে। কিন্তু আর্থিক কারণে এখনই বিয়েতে রাজি হচ্ছিল না সুশান্তর পরিবার। ছেলে আর একটু প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা বিয়ে দিতে চাইছিলেন না। কিন্তু চুমকি বিয়েতে অনড়। বুধবার সুশান্তর বাড়ি চলে যান তিনি। বাড়ির সামনে ধরনায় বসে পড়েন। সুশান্তকে বিয়ে না করা পর্যন্ত তিনি উঠবেন না বলে পণ করেন। দুই পরিবারে টানাপোড়েন চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত সহায়তায় এগিয়ে আসে স্থানীয় পাল্লারোড পল্লীমঙ্গল সমিতি।
টানা সাড়ে তিরিশ ঘণ্টা ধরনার পর মেলে সমাধান সূত্র। ওই ক্লাবের সদস্যদের মধ্যস্থতায় দুই পরিবারই বিয়েতে সম্মতি দেয়। তারপর চারহাত এক করা হয়েছে। ক্লাবের সম্পাদক সন্দীপন সরকার, স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পার্থসারথী খাঁ ও এলাকার বিশিষ্টরা চুমকি-সুশান্তর প্রেমের পরিণতি দিতে আসরে নামেন। দুই পরিবারের সদস্যদের তাঁরা বোঝান। তাঁদের বিয়েতে সম্মত হন দুই পরিবারের লোকজন। বিশেষ করে সুশান্তর পরিবারকে বোঝাতে একটু বেগ পেতে হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁরা রাজি হন। এদিন পাল্লারোড মধ্যবাজার কালীমন্দিরে সুশান্ত ও চুমকির বিবাহ সম্পন্ন হয়। ক্লাব প্রাঙ্গণে বিবাহের অনুষ্ঠানও করা হয। ক্লাবের তরফেই বিয়ের সব ব্যয়ভার বহন করা হয়েছে। খুশি নবদম্পতিও। চুমকির কথায়, আমার বিশ্বাস ছিল ওকে পাবই। এই ক্লাবের সকলের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.