রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: ব্যাংকে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পার্কে গিয়েছিল এক কিশোরী। পার্কে যখন প্রেমিকের সঙ্গে গল্পে মশগুল সে, তখন ঘটনাটি নজরে পড়ে যায় ওই কিশোরীর বাবা। মেয়েকেই শুধু নয়, পার্কে প্রেমিককেও মারধর করেন তিনি। অপমানে টোটো চেপে বাড়ির ফেরার সময়ে চলন্ত ট্রাকের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করল ওই কিশোরী। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কালনায়।
[পুজো শেষে নরবলির চেষ্টা! গ্রামবাসীদের তৎপরতায় রক্ষা পেলেন যুবতী]
আত্মঘাতী কিশোরীর নাম কাজিরা খাতুন। বাড়ি, কালনার সিমলনের মোসলেমাবাদ এলাকায়। এলাকার একটি হাই মাদ্রাসায় একাদশ শ্রেণিতে পড়ত কাজিরা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে ওই কিশোরী। বাড়িতে জানাজানি হওয়ার পর বেশ কয়েকবার অশান্তিও হয়। কিন্তু, প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টানেনি কাজিরা। তার বাবা আনসার শেখ বাসে ঘুরে ঘুরে পাঁপড় বিক্রি করেন। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার সকালে যখন সিমলন এলাকায় কালনা-বর্ধমান রোডে দাঁড়িয়েছিলেন আনসার, তখন দেখেন সাইকেল নিয়ে পার্কের দিকে যাচ্ছে কাজিরা। সন্দেহ হওয়ার মেয়ের পিছু নেন তিনি। এদিকে ততক্ষণে পার্কের সামনে চলে এসেছে কাজিরার প্রেমিকও।
পার্কের কর্মী তাপস মাঝি জানিয়েছেন, ‘দুপুরে দু’জন ছেলে-মেয়ে পার্কে বসে কথা বলার সময়ে মেয়েটির বাবা এসে দু’জনকে বেধড়ক মারধর করেন। মেয়েকে মারতে মারতে পার্কের বাইরে নিয়ে যান। আমরা গিয়ে ওদের ছাড়িয়েছিলাম।’ জানা গিয়েছে, পার্কের বাইরে এসে মেয়েকে বাড়ির ফেরার জন্য টোটোয় তুলে দিয়েছিলেন আনসার। কিন্তু পার্কে বাবার আচরণ মেনে নিতে পারেনি কাজিরা। কিছুটা পথ যাওয়ার পর টোটো থেকে চলন্ত লরির সামনে ঝাঁপ দেয় সে। স্থানীয় বাসিন্দারা ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে নিয়ে যান স্থানীয় একটি হাসপাতালে। হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মারা যায় কাজিরা খাতুন। তার প্রেমিক বেপাত্তা। এদিকে এই ঘটনায় হতবাক মৃতের পরিবারের লোকেরা। বাবা আনসার শেখের আক্ষেপ, ‘মাথা গরম হয়ে যাওয়ায় মেয়ের গায়ে হাত তুলেছিলাম। কিন্তু সে যে এমন কাণ্ড ঘটাবে ভাবতে পারিনি।’
ছবি: মোহন সাহা
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.