দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে হাইড্রেনে পড়ে মৃত্যু শিশুকন্যার। মৃতের নাম মুসারত জাহান (৪)। সে স্থানীয় অঙ্গনওয়াড়ি শিক্ষাকেন্দ্রের পড়ুয়া। প্রতিদিন স্কুল ছুটি হলে বাবা বাড়িতে আনেন। এদিন আধঘণ্টা আগে ছুটি হয়ে যাওয়ায় সে একা একাই বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করছিল। টানা বৃষ্টিতে রাস্তা ও হাইড্রেন প্রায় সমান হয়ে গিয়েছিল। একরত্তির পক্ষে তা বোঝা সম্ভব হয়নি। রাস্তা ভেবে হাইড্রেনে পা বাড়াতেই তলিয়ে যায়। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির বাঁশবেড়িয়ার গ্যাঞ্জেস জুটমিল নিউ লাইনে।
মুসারতের বাবার নাম নবি হোসেন। তিনি ওই জুটমিলের কর্মী। স্ত্রী ও শিশুকন্যাকে নিয়ে তিনি জুটমিলের নিউলাইনেই থাকতেন। বাড়ি থেকে ২০০ মিটারের মধ্যেই রয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি স্কুল। সেখানেই পড়ত খুদে মুসারত। প্রতিদিন মেয়েকে স্কুলে দিতে ও নিতে যেতেন তিনি। সাধারণত দুপুর দু’টোতে মেয়ের স্কুল ছুটি হত। মিল থেকে সোজা নিজেই আনতে যেতেন মেয়েকে। এদিন সকাল থেকে অবিরাম বৃষ্টি চলছে। তারমধ্যেই মেয়েক স্কুলে দিয়ে আসেন। এদিক টানা বৃষ্টির কারণে স্কুলে হাতেগোনা পড়ুয়ার সংখ্যা দেখে আধঘণ্টা আগেই ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। ছুটির পর স্কুল থেকে বেরিয়ে বাবাকে দেখতে না পেয়ে একা একাই বাড়ির পথে হাঁটতে থাকে মুসারত। তারপর পা পিছলে কখন হাইড্রেনে পড়ে গিয়েছে সে কেউই খেয়াল করেনি। দু’টো বাজতেই মেয়েকে স্কুলে আনতে এসে বাবার টনক নড়ে। স্কুলে তালা ঝুলছে, আধঘণ্টা আগে ছুটি হয়ে গিয়েছে স্কুল। পাগলের মতো মেয়েকে খুঁজতে শুরু করেন গনি। বাড়িতেও যান। কোথাও মেয়ের দেখা মেলেনি। হাইড্রেনের সঙ্গে পুকুরের সংযোগস্থলে একটি জাল লাগানো আছে। তাতেই আটকে রয়েছে অচেতন মুসারত। তখনও ছোট্ট হৃদপিণ্ডটি ধুকপুক করছে। তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করে চুঁচুড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
অকালে মেয়ে হারানোর ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন মুসারতের অভিভাবকরা। আধঘণ্টা আগে স্কুল ছুটি হল, অভিভাবকদের জানানো হল না। একরত্তি ছেলে মেয়েগুলি একা একা কীভাবে ফিরবে সেদিকে শিক্ষিকারা কেউ নজরই দিলেন না। অন্যদিকে স্কুলের বাইরেই হাইড্রেন। তাতে উপচে পড়ছে জল। গোটা ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.