সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গুজব আর অন্ধবিশ্বাসের গ্রাসে বাঁকুড়ার কোতুলপুর। পড়াশোনা উঠেছে লাটে। বাঁকুড়ার মতো বারাসতের দত্তপুকুরে স্কুলের মধ্যে ভূতাতঙ্ক। ক্লাসরুমে টেবিলে নাকি অশরীরী নাচছে। গুজবের ধাক্কায় দত্তপুকুরের ওলা কালসারা কাদ্রিয়া হাই মাদ্রাসা স্কুলে ছুটি দিয়ে দিতে হয়। শিক্ষকরা পড়ুয়াদের অনেক বুঝিয়েও ক্ষান্ত করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে সমাধান হয়। ভূতের আতঙ্ক ভুলে আবার স্কুলমুখো হচ্ছে পড়ুয়ারা।
দিন চারেক আগের ঘটনা। স্কুলে তখন টিফিন চলছে। ক্লাসরুম কার্যত ফাঁকা। বেশিরভাগ পড়ুয়া খেলাধূলায় ব্যস্ত। এমন সময় ওলা কালসারা কাদ্রিয়া হাই মাদ্রাসা স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রী ক্লাসরুম থেকে দৌড়ে বেরিয়ে আসে। তারা শিক্ষকদের জানায় ক্লাসের টেবিল উঠে নাকি ভূত সাদা পোশাকে নৃত্য করছে। নিজেদের বক্তব্য প্রমাণে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীরা টেবিলে পায়ের ছাপ দেখায়। গুজব ছড়াতে বেশি সময় লাগেনি। বিষয়টি জানাজানি হতে স্কুলের অন্য ক্লাসের পড়ুয়ারাও আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। নিচু ক্লাসের বাচ্চারা কান্না জুড়ে দেয়। শিক্ষকরা তাদের বোঝাতে থাকেন কিছুই হয়নি, এটি মনের ভুল। তবুও পড়ুয়াদের উদ্বেগ যায়নি। এমনকী ভয় পেয়ে যায় স্কুলের নবম-দশম শ্রেণির পড়ুয়ারও। অভিভাবকরা বাচ্চাদের মনের এই অবস্থা বুঝে তাদের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। অগত্যা স্কুল ছুটি দেওয়া হয়।
অবিশ্বাস কাটাতে উদ্যোগ নেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক এম রহমান। অভিভাবকদের সঙ্গে তিনি কথা বলার সিদ্ধান্ত নেন। সকলকে বোঝানো হয় মনের ভুল থেকে এমন কথা বলছে পড়ুয়ারা। অভিভাবকদের বলা হয় বাড়িতে টিভিতে কোনও ভূতের সিরিয়াল বা বই পড়লে এমন হতে পারে। শিক্ষকরা বলেন মনের মধ্যে সেই প্রতিক্রিয়া থেকে কেউ হয়তো ফাঁকা ক্লাসরুমে ভূতজাতীয় কিছু ভেবে ফেলতে পারে। পায়ের ছাপ নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে শিক্ষকরা জানান অনেক সময় পড়ুয়ারা টেবিলে উঠে লাফায়। এটাই কারণ। বাড়িতে ভূতের সিরিয়াল বা আলোচনা করা হবে না বলে বৈঠকে ঠিক হয়। সঙ্গে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনার পর অভিভাবকদের উদ্বেগ কাটে। সন্তানদের ফের স্কুলে পাঠানোর তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.