নন্দন দত্ত, সিউড়ি: সন্ধ্যে হলেই নাকি ভূত বেরোচ্ছে পাড়ায়। সেই কারণে গত কয়েকদিন ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছে সিউড়ির দত্ত পুকুরের কাছে বাগদি পাড়া। দিন দশেক আগে ওই পাড়ার অপমৃত্যু হয়েছে রঞ্জন বাগদি ওরফে আলুর। সেই ঘটনার পর তাঁর কাছের বন্ধু ছোটন বাগদি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই দুই যোগে এলাকায় রটে যায় সন্ধে হলেই ভূত বেরোচ্ছে। যদিও ছোটনের বাড়ির লোক স্বীকার করে তাদের ছেলে অসুস্থ হয়েছেন অন্য কারণে। আলুর বাড়ির লোকেরাও ‘ভূত’ দেখতে পাচ্ছে না বলে জানিয়েছে। বরং তাদের দাবি এটা একটা কুসংস্কার। ঝগড়া লাগানোর চেষ্টা।
সিউড়ি ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে দত্তপুকুরের কাছে বাগদি পাড়া। দিন দশেক আগে স্ত্রীর সঙ্গে বচসার জেরে নিজের ঘরে গলায় দড়ি নিয়ে আত্মঘাতী হন রঞ্জন বাগদি ওরফে আলু। মৃত্যুর পর তাঁকে দাহ করতে শ্মশানে নিয়ে যায় তাঁর বন্ধু পলাশ, ছোটন-সহ অন্যরা। শ্মশান থেকে ফেরার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন ছোটন বাগদি। তাঁর জন্ডিস ধরা পড়ে। একইসঙ্গে নার্ভের দোষও দেখা যায়। তারপর থেকেই পাড়ায় রটে যায় আলুর আত্মা পাড়ায় ঘুরছে। রাত বাড়লেই আলুর আত্মার শিকার হতে পারে যে কেউ। ভয়ে তাই কেউ বাড়ি থেকে বেরোচ্ছে না। কিন্তু ছোটনের দিদি টিনা বাগদি বলেন, ‘ভাই নেশা করে অসুস্থ হয়েছে।’
[ আরও পড়ুন: ‘অশান্তিতে জড়িও না’, বাবার পরামর্শে বীজপুরের বাইরে বেরলেন না শুভ্রাংশু ]
উল্লেখ্য ছোটন সিউড়ি বেনীমাধব মোড়ে মাংস কাটার দোকানের কর্মী। সেখান থেকেই তাঁর নেশা করা শুরু হয়। তার জেরেই তাঁর লিভারে সমস্যা দেখা দিয়েছে।অন্যদিকে আলুর বাড়ির দাবি তাঁদের ছেলের নামে বদনাম রটানো হচ্ছে। এটা কুসংস্কার। আলুর মা সখী বাগদি বলেন, “ছোটনদের ঘরের সঙ্গে আমাদের ঝগড়া লাগাবার জন্য এই মিথ্যা রটনা। আমরা গভীর রাত পর্যন্ত বাইরে উঠোনে থাকি। আমার ছেলের আত্মা বুঝতে তো পারব। এর পিছনে চক্রান্ত রয়েছে।” আলুর বৌদি মহামায়া বাগদি বলেন, “আলুর মৃত্যুর বেশ কিছুদিন আগে থেকেই এলাকায় রাস্তার কুকুর খুব লাগছে। এমনকী মৃত্যুর পরে কুকুরের সংখ্যা বেড়েছে। বহিরাগতদের আনাগোনার জন্য কুকুরের এমন আচরণ। তাই প্রশাসনের এই এলাকায় নজর দেওয়া উচিত।” এলাকার বর্ণালী ক্লাবের সম্পাদক তারকনাথ ধীবর জানান, এলাকায় কেউ গুজব ছড়াচ্ছে। তবে এর পিছনে যারা এলাকায় অপকর্ম করে তাদের হাত রয়েছে। প্রশাসনের বিষয়টির দিকে নজর দেওয়া উচিত বলে জানান তিনি।
ছবি: শান্তনু দাস
[ আরও পড়ুন: টানা ৫৯ দিন বন্ধ থাকবে স্কুল, ছুটি কমানোর দাবিতে সরব পড়ুয়ারা ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.