Advertisement
Advertisement

Breaking News

এক কোপেই বাজিমাত, ১৩ বছর বয়স থেকেই বলি দিতে ওস্তাদ শান্তি কসাই

বংশ পরম্পরায় কসাইয়ের কাজ করছেন তিনি৷

Ghatal: this man is performing special puja ritual for years
Published by: Shammi Ara Huda
  • Posted:October 4, 2018 4:43 pm
  • Updated:October 4, 2018 5:45 pm  

শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: এক কোপে ছাগলের ধড় থেকে মাথা আলাদা করে দিতে পারেন শান্তি৷ হ্যাঁ, সপ্তম শ্রেণিতেই ছাগ বলির হাতেখড়ি হয়ে গিয়েছিল। ৪০ বছর ধরে দুগ্গা মায়ের সামনে বলি দিয়ে চলেছেন বছর পঞ্চাশের শান্তি কর্মকার। ছাগ বলিতে শান্তিবাবুর থেকে বড় ওস্তাদ ঘাটালে আর একজনও নেই। যাকে বলে নাম করা কসাই। মা দুগ্গা থেকে শুরু করে কালী, শীতলা, কোনও দেবীই শান্তির দর্শন থেকে বাদ যান না। নতুন বস্ত্র পরে কোমরে গামছা বেঁধে হাড়িকাঠের সামনে যখন হাঁটু গেড়ে বসে শুধু ‘জয় মা’ বলে এক কোপ, তাতেই বলি সম্পূর্ণ। তখন কে বলবে এঁর নাম শান্তি৷

দোহারা চেহারার শান্তি কর্মকারের কপালে রক্ত তিলক৷ হাতে খড়গ৷ প্রকৃত নাম শান্তি দত্ত কর্মকার৷ ঘাটাল শহরের কোন্ননগরের বাসিন্দা৷ জাতিগত ভাবে শান্তিবাবুরা কামার সম্প্রদায়ের৷ বংশগতভাবে  দেব-দেবীর সামনে ছাগ বলি দিয়ে আসছেন শান্তিবাবুর পরিবার৷ ঠাকুরদা নগেন কর্মকার ছিলেন নামকরা কসাই৷ তাঁর ছেলে শান্তিবাবুর বাবা শম্ভুনাথ কর্মকারও ছিলেন কসাই৷ কাকা রাসবিহারী কর্মকার ও রাম কর্মকার সবাই একই পথের পথিক। তাঁদের কাছেই ছাগ বলিতে হাতেখড়ি। শান্তিবাবুর স্পষ্ট মনে আছে, সেবার পুজোর সময় তাঁর কাকা জয়দেব কর্মকার দারুণ অসুস্থ। কী করে বলি হবে, উদ্যোক্তারা বেশ সমস্যায় পড়ে গিয়েছেন৷ শান্তিবাবু তখন সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র৷ ওই বয়সেই ছাগ বলি দিতে এগিয়ে আসেন তিনি৷ কাকা জয়দেববাবুর কাছ থেকে কৌশল শিখে নিয়ে ছোট্ট শান্তি খড়গ হাতে তুলে নেয়৷ সেই বয়সেই খড়গের এক কোপে ছালের ধড় থেকে মাথা আলাদা করে দিয়েছিলেন তিনি৷ সেই শুরু, আজও পরম্পরা বদলায়নি। গত ৪০বছরে কয়েক হাজার যে ছাগ বলি দিয়েছেন তার কোনও হিসেব নেই৷ দুর্গা, শীতলা, কালী কোনও দেবদেবীই তালিকা থেকে বাদ যায়নি৷

Advertisement

[দশভুজা নন, ভট্টাচার্য বাড়িতে বধূ রূপে পূজিতা হন দেবী দূর্গা]

এক সঙ্গে পরপর ৫০ কি ১০০ ছাগ বলি তাঁর কাছে নস্যি৷ রক্তের স্রোত বয়ে যায়, এক সঙ্গে এত রক্ত দেখে মন খারাপ করে না? শান্তিবাবু বলেন, “কেন মন খারাপ হবে? ছাগ বলির সময় আমি তখন আমি থাকি না৷ তখন আমি মায়ের একজন সেবক৷ ওই সময় আমি ছাগ ছাড়া আর কিছু দেখতে পাই না৷ মায়ের সামনে আমি যেন কেমন হয়ে যাই৷” ঢাকের বোল আর ছাগের ম্যা ম্যা আওয়াজ সবমিলিয়ে পরিবেশটাই যেন বদলে যায়৷ তার মাঝে খড়গ হাতে শান্তি কসাই৷ মায়ের সামনে বলি প্রদত্ত ছাগকে স্নান করিয়ে, কপালে সিঁদুর পরিয়ে যখন পুরুত ঠাকুর বলির জন্য হাঁড়িকাঠের দিকে এগিয়ে দেন তখনই প্রস্তুত হয়ে যান শান্তিবাবু৷ দুর্গাপুজো আসছে৷ ইতিমধ্যেই উদোক্তাদের আমন্ত্রণ এসে গিয়েছে৷ তিনিও প্রস্তুত৷ কত দক্ষিণা পান? হাসতে হাসতে তিনি বললেন, “প্রতি ছাগ পিছু ৫০ টাকা ও ছাগের মাথা পাই৷ মাথাগুলি বিক্রি করে দিই৷ মোটা টাকা পাওয়া যায়৷” এবার বলির দাম বাড়াতে চান তিনি৷ তাঁর সহ্যস্য জবাব, সবকিছুর দাম বাড়ছে ছাগ বলির ক্ষেত্রে কেন পুরনো দাম থাকবে? 

ছবি: সুকান্ত চক্রবর্তী

[মহালয়ার আগেই উৎসব শুরু বীরভূমে, কৃষ্ণনবমীতে হল দেবীর বোধন]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement