ছবি: প্রতীকী
শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: করোনা (Corona Virus) সন্দেহে মৃতদেহ পড়ে রইল টানা সাত ঘণ্টা। নিজের ধর্মের কেউ উঁকিও মারতে আসেনি। ফলে রীতিমতো মুষড়ে পড়েন মৃতের ছেলে সুকুমার রানা। অবশেষে এগিয়ে এলেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন।
কাঠ, বাঁশ কেটে চিতা সাজিয়ে মৃতদেহ দাহ করলেন শেখ চাঁদ মহম্মদ, পিয়ার আলি, রোবিয়াল আলি আর আখতার আলিরা। সারাক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে দাহকার্য সম্পন্ন করলেন খোকন খান। তাঁর আর একটি পরিচয় তিনি পঞ্চায়েত সদস্য। মঙ্গলবার এমন নজিরবিহীন সম্প্রীতির সাক্ষী থাকল পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের মামুদপুর গ্রাম। ঘটনায় প্রকাশ, মঙ্গলবার বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান মামুদপুর গ্রামের অশীতিপর বৃদ্ধ বলাই রানা। মৃতের প্রতিবেশীরা করোনা সন্দেহে দাহ করতে এগিয়ে আসেননি বলে অভিযোগ করেছেন মৃতের ছেলে সুকুমার রানা। তিনি বলেন, “আমি খুব মুষড়ে পড়েছিলাম। তখন মুসলিমভাইরা এগিয়ে এসে সৎকারের কাজ করেছেন। আমি ওঁদের কী বলে যে ধন্যবাদ দেব আমার ভাষা নেই।”
অবশ্য মৃতের সোয়াব টেস্ট নেগেটিভ আসে। তারপরও কেউ এগিয়ে যায়নি বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে এগিয়ে যান চাঁদ মহম্মদরা। মামুদপুর শ্মশানেই হিন্দুমতে দাহ করা হয়। প্রবীণ চাঁদ মহম্মদ শেখ বলেন, “আমরা খবর পেয়েই মৃতদেহ সৎকার করতে এগিয়ে যাই। বিপদে আপদে আমরা পরস্পরকে সাহায্য করি। আমাদের মধ্যে কোনও ভেদ নেই।” পঞ্চায়েত সদস্য খোকন খান বলেন, “আমরা কোনও ধর্মের পরিচয়ে নয়, মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।”
তবে এই প্রথমবার নয়, করোনা আবহে এর আগেও এ রাজ্যে একাধিকবার উঠে এসেছে এই ছবি। দেখা গিয়েছে, রমজান মাসেও একদল মুসলিম যুবক অপরিচিত কিংবা হাসপাতালে পরিত্যক্ত মৃতদেহ সৎকারের দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। এবার দেশের সংকটের দিনে মানবিকতার সাক্ষী রইল দাসপুর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.