ফাইল ছবি
শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: বহু প্রতীক্ষিত ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য দাসপুরে জমি মাপজোক শুরু হতেই ক্ষোভ! ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা ইতিমধ্যেই গড়ে তুলেছেন চন্দ্রেশ্বর খাল খনন প্রতিবাদী কমিটি। তাঁদের দাবি, দাসপুর ১ ব্লকের বৈকুণ্ঠপুরের চন্দ্রেশ্বর খাল থেকে সুরতপুর শিলাবতী নদী পর্যন্ত নতুন করে খাল খনন করতে দেওয়া হবে না। এই খাল খননের জন্য তিন ফসলি জমি থেকে শুরু করে প্রচুর ঘরবাড়ি নষ্ট হবে। এই খাল খননের প্রতিবাদ করে একটি কমিটিও গড়ে তুলেছেন গ্রামবাসীরা।
কমিটির পক্ষ থেকে একটি লিফলেটও ছড়ানো হয়েছে দাসপুরের বিভিন্ন গ্রামে। উল্লেখ্য, বন্যার সময় শিলাবতী নদীর জলের চাপ কমাতে সুরতপুর থেকে বৈকুণ্ঠপুর পর্যন্ত একটি নতুন খাল কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেচ দপ্তর। প্রায় ছয় কিলোমিটার এই খাল কাটতে কয়েকশো হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে চায় রাজ্য সরকার। তারই প্রতিবাদ করছেন গ্রামবাসীরা। এ বিষয়ে সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, “বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কৃষি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষ তথা দলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আশিস হুতাইতকে দেখতে বলা হয়েছে।” আশিসবাবু বলেন, “দাসপুরের বৈকুণ্ঠপুর থেকে সুরতপুর পর্যন্ত খাল কাটার যাঁরা বিরোধিতা করছেন, তাঁরা মনে হয় গোটা বিষয়টি জানেন না। আমরা নিশ্চয়ই তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারি। তবে তার আগে আমরা নিজেরা দলীয় স্তরে আলোচনায় বসব। তবে এটা বলে রাখি রাজ্য সরকার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কার্যকরী করতে বদ্ধপরিকর।”
বহু প্রতীক্ষিত ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানকে ইস্যু করে সদ্য লোকসভা নির্বাচনে ভোটপ্রচার করেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী অভিনেতা দেব। বিপুল ভোট পেয়ে তিনি জয়লাভও করেন। জয়ের পরই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কার্যকর করতে উঠে পড়ে লেগেছেন সাংসদ দেব। ভোট চুকতেই সেচ দপ্তর ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কার্যকরী করতে উদ্যোগী হয়েছে। জানা গিয়েছে, ঘাটাল শহরে দুটি হেভি পাম্প বসছে। পাশাপাশি শিলাবতী নদীর জলের চাপ কমাতে দাসপুরে একটি নতুন খাল কেটে চন্দ্রেশ্বর খাল হয়ে রূপনারায়ণ নদে ফেলতে চায় সেচ দপ্তর। প্রায় ছয় কিলোমিটার এই খালের জন্য কয়েক হেক্টর জমি নিতে চায় রাজ্য সরকার। তার জন্য জমির মাপজোক শুরু করেছে দাসপুর এক নম্বর ব্লক ভূমি দপ্তর।
মাপজোক শুরু হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন বৈকুণ্ঠপুর, চাঁদপুর, ঝুমঝুমি, হরিরামপুর, সুরতপুর প্রভৃতি গ্রামের মানুষ। তাতে যোগ দিয়েছেন দাসপুর দুই নম্বর ব্লকের মানুষও। দুই ব্লকের মানুষ গড়ে তুলেছেন একটি চন্দ্রেশ্বর খাল খনন প্রতিবাদী কমিটি। কমিটির সম্পাদক হরেকৃষ্ণ জানা বলেন, “ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য এই যে নতুন করে একটি খাল খনন করতে চলেছে রাজ্য সরকার, তা সম্পূর্ণ অবৈধ। কারণ, এই খালের কোনও উল্লেখ নেই ২০১১ সালে জমা পড়া ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের ডিপিআর-এ। আমরা মনে করি এই খাল খনন অবৈজ্ঞানিক। খাল খনন হলে প্রচুর তিন ফসলি কৃষিজমি, প্রচুর ঘরবাড়ি নষ্ট হবে। এমনকী, নতুন করে দাসপুরের দু’টি ব্লক প্রতি বছর প্লাবিত হবে। আমরা তা চাই না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.