রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary) বিধায়ক পদ ছাড়বেন কি না, তা নিয়ে তুমুল জল্পনার মাঝেই পদত্যাগ করলেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূলের (TMC) সাধারণ সম্পাদক ধীরেন্দ্রনাথ পাত্র। মঙ্গলবার দলীয় নেতৃত্বকে ইস্তফাপত্র পাঠালেন শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ এই নেতা। এই প্রথম জেলায় সংগঠনের দায়িত্বে থাকা কোনও ব্যক্তি নিজে থেকে পদ ছেড়ে সরে গেলেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি স্পষ্ট জানালেন, শুভেন্দুর প্রতি দল যেভাবে ‘অবিচার’ করছে, তা মেনে নিতে পারছেন না।নেতার সংগ্রামের শরিক হতেই নিজের পদ ছেড়েছেন।
শুভেন্দুর গড়ে এমন ছোটখাটো স্তরে বিদ্রোহের ফুলকি দেখা যাচ্ছিল তিনি নিজে মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে আসার পরই। শুধু তাই নয়, আশেপাশের জেলাগুলিতেও জোরদার হচ্ছিল ‘আমরা দাদার অনুগামী’দের অস্তিত্ব। পূর্ব মেদিনীপুর (East Midnapore) জেলা তৃণমূলের সম্পাদক কণিষ্ক পণ্ডা শুভেন্দুর পাশে দাঁড়াতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজকর্ম নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। তার পরপরই তাঁকে কলকাতা থেকে শীর্ষ নেতৃত্ব দল থেকে বহিষ্কারের চিঠি পাঠায়। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই সম্ভবত ধীরেন্দ্রনাথ পাত্র নিজেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলেন। আর এই পদক্ষেপের মধ্যে দিয়ে সে অর্থে জেলায় তিনিই প্রথম সরাসরি তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ধীরেন্দ্রনাথ পাত্রের বক্তব্য, ”শুভেন্দু অধিকারীর উপর ২০১১ সাল থেকেই বঞ্চনা চলছে। দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা সত্ত্বেও তাঁকে যোগ্য মর্যাদা দেওয়া হয়নি তৃণমূলে। দল নিজের প্রয়োজনে তাঁকে ইচ্ছেমতো ব্যবহার করেছে। শুভেন্দুবাবুর ডাকে আমি তৃণমূলে যোগ দিই। আমাকে দায়িত্বও দিয়েছেন। কিন্তু দায়িত্ব আর আমি পালন করতে পারছি না। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে।” তাহলে পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপ কী?এই প্রশ্নের উত্তরে জেলা তৃণমূলের সদ্যপ্রাক্তন সাধারণ সম্পাদকের স্পষ্ট বক্তব্য, ”আমি শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে আছি, থাকব। আপনারাও বুঝতে পারছেন, উনি কী করতে চাইছেন। উনি যা করবেন, আমিও সে পথেই যাব।” ফলে শুভেন্দুর গড়ে যে দলের মধ্য়েই বিদ্রোহের আঁচ বাড়ছে, এই ঘটনাই বোধহয় তার প্রমাণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.