Advertisement
Advertisement

যৌন উত্তেজক ও পারমাণবিক রাসায়নিক তৈরিতে দেদার পাচার তক্ষক

তক্ষকের ওজন বাড়াতে না কি খাওয়ানো হয় সেদ্ধ ডিম! কখনও আবার হরমোন ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়!

Gecko Smuggling On The Rise In North Bengal
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 25, 2016 11:10 am
  • Updated:October 25, 2016 11:10 am  

ব্রতীন দাস ও বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য: পর্যটকের বেশে দালাল! বারবার ঘাঁটি বদল চোরাশিকারিদের!
তদন্তে নেমে ডুয়ার্সে তক্ষক পাচারকারীদের সবচেয়ে বড় ডেরার হদিশ মিলল মাদারিহাটের খয়েরবাড়িতে৷ খুট্টিমারির জঙ্গল লাগোয়া মরাঘাট, ধূপগুড়ির দুরামারি ও বৈকুণ্ঠপুরের সরস্বতীপুর চা বাগানের বস্তিতেও মিলেছে চক্রের সন্ধান৷ বন দফতরের কাছে খবর, শিলিগুড়ির অদূরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ফুলবাড়িতেও রয়েছে পাচারকারীদের গোপন আস্তানা৷
সশস্ত্র সীমাবল বা এসএসবি-র জওয়ানরা বলছেন, মালদহে রয়েছে তক্ষক পাচারে যুক্ত উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় চক্রটি৷ যাদের দু’টি শাখা৷ একটি জাল টাকা কারবারের দেখাশোনা করে৷ অন্যটি জড়িত বন্যপ্রাণীর দেহাংশ পাচারে৷ বেশ কয়েকবার অভিযান চালালেও এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা যায়নি চক্রের মাথাদের৷
ডুয়ার্সের জঙ্গলে মূলত দু’ধরনের তক্ষক মেলে৷ একটি লেপার্ড গেকো৷ অন্যটি, টোকে গেকো৷ তবে লেপার্ড গেকো বিরল৷ পাচারকারীদের থাবায় ইতিমধ্যেই মণিপুরের জঙ্গল থেকে লোপাট গোল্ডেন গেকো৷ হাঁস পা না কি মুরগি পা? দেখেশুনেই ঠিক হয় দরদাম৷
সাড়ে ন’ইঞ্চি লম্বা, ৫২ গ্রাম ওজনের হাঁস পা তক্ষক৷ এদের পায়ের পাতা একেবারে হাঁসের মতো৷ মুরগি পা গেকো লম্বায় ১৫ ইঞ্চি৷ ওজন ২৫৫ গ্রাম৷ হাঁস পায়ের চাহিদা বেশি৷ প্রচার, এই তক্ষকের শরীরে না কি রয়েছে একপ্রকার বিষাক্ত দানা৷ যা পারমাণবিক রাসায়নিক তৈরিতেও কাজে লাগে! এসবের অবশ্য কোনও নির্ভরযোগ্য প্রমাণ নেই৷ কিন্তু প্রচারের জেরেই তা উজাড় হয়ে যাচ্ছে জঙ্গল থেকে৷
পাচারকারীরা বলছে, দৈর্ঘ্য এবং ওজনের উপরই নির্ভর করে তক্ষকের রেট৷ ফিতে দিয়ে মাপে কারচুপির আশঙ্কা থাকে৷ তাই এখন পাচারকারীরা সঙ্গে রাখে ডিজিট্যাল স্কেল৷ তক্ষকের ওজন বাড়াতে না কি খাওয়ানো হয় সেদ্ধ ডিম! কখনও আবার হরমোন ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়৷
দিনের পর দিন তক্ষক পাচার বেড়ে চলায় উদ্বিগ্ন বন দফতর৷ পাচার রুখতে পুলিশ ও এসএসবি জওয়ানদের সাহায্য নিচ্ছে তারা৷ কিন্তু তার পরও আটকানো যাচ্ছে না পাচার৷ খোলাখুলি স্বীকার করে নিচ্ছেন বনকর্তারা৷ শীতে একটু অবশ হয়ে পড়ে প্রাণীটি৷ সে সময়ই এদের ধরা সহজ৷ ফলে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত তক্ষক পাচার সবচেয়ে বেড়ে যায়৷ এবার অবশ্য তক্ষক-সহ উত্তরের জঙ্গল থেকে বন্যপ্রাণীর দেহাংশ পাচার রুখতে এসএসবি, পুলিশ ও বন দফতরকে নিয়ে তৈরি হয়েছে কোর কমিটি৷ রীতিমতো ব্লু-প্রিণ্ট করে অভিযানে নামছে তারা৷
তক্ষক পাচারের জাল ছড়িয়ে অসম, মণিপুরের সঙ্গে চিন, নেপাল, ভুটান, মায়ানমার এমনকী তাইল্যান্ডেও৷ তক্ষক পাচারের অভিযোগে রবিবার রাতেই দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে ফালাকাটা থানার পুলিশ৷ ফালাকাটার সাড়ে আট মাইল এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে কুড়ি হাজার টাকার বিনিময়ে একটি তক্ষক দেওয়ার চুক্তি হয় জয়গাঁর এক ব্যক্তির৷ সেইমতো হাতে চলে আসে পাঁচ হাজার টাকা অগ্রিমও৷
রবিবার রাতে বাকি টাকা দিয়ে তক্ষক নিতে আসে জয়গাঁর ওই ব্যক্তি৷ সঙ্গে আনে একজনকে৷ কিন্তু যাদের হাতে তক্ষক তুলে দেওয়ার কথা ছিল, তারা বাহানা জুড়ে দেয়৷ আরও বেশি টাকা দর চায়৷ এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বেধে যায়৷ শুরু হয় ধ্বস্তাধ্বস্তি৷ এলাকার লোকজন টের পেয়ে তাদের ধরে ফেলে৷ গণপিটুনি দিয়ে দু’জনকে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে৷

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement