বিপ্লব দত্ত, কৃষ্ণনগর: বিশ্বকর্মাই বাঁচিয়ে দিলেন। গাংনাপুরের বাজি কারাখানায় বিস্ফোরণের পর এমনটাই বলছেন ৩৫ জন কর্মী। এলাকাতেই কারখানা, তাই দুপুরে বাড়িতে খেতে যাওয়ার চল রয়েছে। রবিবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বেলা তিনটের কিছু আগেই কর্মীরা খেতে চলে যান। তারপরেই ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। সেইসময় কারখানায় ছিলেন মালিক বেশ কয়েকজন। বিস্ফোরণে মালিক ও দুই কর্মী প্রাণ হারান। ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতায় আশপাশের বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষোভ ফুঁসছেন এলাকাবাসী।
এদিকে পুজোর আগে কাজ হারিয়েও ভগবানকে ধন্যবাদ দিতে ভোলেননি বেঁচে যাওয়া ৩৫ জন কর্মী। তাঁদের দাবি, ভগবান বিশ্বকর্মাই প্রাণে রক্ষা করেছেন। ওই সময় কারখানায় থাকলে আজ হয় মর্গে নাহলে খাটিয়ায় চেপে শ্মশানে যেতে হত। ঘটনার সময় কারখানাতে ছিলেন পাঁচজন। কারখানার মালিক মিঠু মণ্ডল হয়তো বেঁচে যেতেন। কিন্তু বিধি বাম, বিস্ফোরণের কিছুক্ষণ আগেই কারখানায় আসেন তিনি। এদিন ভাঙাচোরা কারখানার সামনে দাঁড়িয়ে এক কর্মী নিজের ভাগ্যকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘বিস্ফোরণে মারা যেতেই পারতাম। কিন্তু খাওয়াদাওয়ার জন্য বাড়ি চলে যাই। আচমকাই বিকট আওয়াজ শুনে ছুটে এসে দেখি, কারখানা থেকে গলগলিয়ে বেরিয়ে আসছে কালো ধোঁয়া। এরপর দাউ দাউ আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। বিস্ফোরণের ভয়াবহতায় এখনও ভয়ে শিউড়ে উঠছি। ভাবতেই পারছি না যে বেঁচে আছি। ’
বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিনই ভয়বহ বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণে শুধু কারখানা নয়, মৃত্যু হয়েছে মালিকেরও। কালকের খাওয়া কীভাবে জুটবে জানেন না কর্মীরা। তাই বিশ্বকর্মা পুজোর কথা ভাবতেও পারছেন না। পুজো হল না গাংনাপুরে। কিন্তু বিপদের আঁচ রয়েই গেল। গোটা এলাকাই যে বারুদের স্তূপে বাস করে। গাংনাপুরের এদিক সেদিকে ছড়িয়ে রয়েছে হাজারো বেআইনি বাজি কারখানা। পুলিশ জেনেও কোনওরকম পদক্ষেপ নেয় না। এমনটাই অভিযোগ বাসিন্দাদের। একটা সবে বিপর্যয় ডেকেছে। বাকিগুলি যদি বিস্ফোরণের পর্যায়ে পৌঁছায় তাহলে গাংনাপুরের অস্তিত্বই থাকবে না। এই ভেবে আতঙ্কের প্রহর গুনছেন বাসিন্দারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.