চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: সামনেই পুজোর মরশুম। তার আগে গঙ্গাজলের আকাল দেখা দিল আসানসোল মুখ্য ডাকঘরে। প্রতিদিনই কার্যত হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন গ্রাহকরা। জানা গিয়েছে, তিনমাস ধরে আসানসোল ডাকঘরে মিলছে না গঙ্গাজল। গত শ্রাবণ মাস থেকেই এই অবস্থা শুরু হয় বলে অভিযোগ। এমনকী, দুর্গাপুজোর সময়ও গঙ্গাজল পাওয়া যাবে কি না নিশ্চয়তা দিতে পারেননি ডাক বিভাগের কর্তারা। তবে তার আগে সেপ্টেম্বরেই রয়েছে গণেশ ও বিশ্বকর্মা পুজো। সেই সময় গঙ্গাজলের অভাবে ভুগতে হতে পারে। এমটাই মনে করছেন আসানসোলবাসী। তবে দুর্গাপুজোর আগে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করছেন আসানসোল ডাক বিভাগের মুখ্য অধিকর্তা অভিজিৎ ভট্টাচার্য।
উল্লেখ্য, গত পুজোর মরশুমে গঙ্গাজল বিক্রি করেই বাজিমাত করেছিল ডাক বিভাগের আসানসোল শাখা। হৃষিকেশ ও গঙ্গোত্রী থেকে সংগ্রহ করা গঙ্গাজলের বিপুল চাহিদা রয়েছে আসানসোলে। এককথায় বোতলের গঙ্গাজল যে শুধুমাত্র গঙ্গোত্রীরই, সে ব্যাপারে ভক্তদের ভরসার জায়গা একমাত্র আসানসোল পোস্ট অফিস। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিশেষ ইনডেন্টও পাঠানো হয়েছিল। চাহিদার কথা মাথায় রেখে এবার প্রায় ১২ হাজার বোতল গঙ্গাজলের বরাতও দেওয়া হয়েছিল। তবে সমস্ত বিক্রি হয়ে যাওয়ায় জুন পর্যন্ত মাত্র ১৩৫ বোতল গঙ্গাজল মজুত ছিল। সেই জল চাহিদামতো সাবপোস্ট অফিসগুলিতে সরবরাহ করায় মুখ্য ডাকঘরে গঙ্গাজলের সংকট দেখা দেয়। জানা গিয়েছে, কলকাতা পার্সেল অফিসে চিঠি দেওয়ার পরে আর গঙ্গাজল পাওয়া যায়নি।
[‘ভুতুড়ে ট্রলার’ থেকে উদ্ধার ৪ হাজার লিটার চোরাই কেরোসিন, জুনপুটে চাঞ্চল্য]
বহু ধর্মপ্রাণ মানুষের বিশ্বাস, হৃষিকেশ ও গঙ্গোত্রীর জল দূষিত হয় না। তাই চাহিদার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে হৃষিকেশ ও গঙ্গোত্রী। ইচ্ছে থাকলেও অনেকেই ওই দু’জায়গায় গিয়ে জল আনতে পারেন না। কিন্তু, এখন পোস্ট অফিসে গিয়ে কড়া নাড়লেই বোতলবন্দি জল পৌঁছে যায় বাড়িতে। ডাকবিভাগ সূত্রে খবর, হৃষিকেশ ও গঙ্গোত্রীর জলের দাম আলাদা। হৃষিকেশ থেকে আনা ২০০ মিলিলিটার গঙ্গাজলের দাম ১৫ টাকা। ৫০০ মিলিলিটারের দাম ২২ টাকা। গঙ্গোত্রীর জলের দাম একটু বেশি। ২০০ মিলিলিটার জলের বোতলের দাম ২৫ টাকা। ৩৫ টাকায় পাওয়া ৫০০ মিলিলিটার গঙ্গাজল। কর্মীদের মতে, পোস্ট কার্ড বিক্রি করে ডাক বিভাগের তেমন লাভ হচ্ছিল না। প্রকল্পটি ভরতুকিতে চলত। সেখানে গঙ্গাজল বিক্রি শুরু হওয়ায় লাভের মুখ দেখেছে আসানসোল পোস্ট অফিস। এই প্রসঙ্গে মুখ্য অধিকর্তা অভিজিৎ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, দুর্গাপুজোর আগেই পর্যাপ্ত গঙ্গাজলের জোগানের ব্যবস্থা তিনি করবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.