ধীমান রায়, কাটোয়া: দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে বুধবার দুপুরে কাটোয়া শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হল নানুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বিজেপি কর্মীর দেহ। মঙ্গলবার রাতে সিয়ান হাসপাতাল মর্গ থেকে নিহত বিজেপি কর্মী স্বরূপ গড়াইয়ের দেহ তাঁর আত্মীয়স্বজনরা রামকৃষ্ণপুর গ্রামে বাড়িতে নিয়ে যান। বুধবার সকালে মৃতদের নিয়ে বিজেপি কর্মীরা নানুর থানার বাঁসাপাড়ায় মিছিল করেন। তারপর মৃতদেহ দুপুর প্রায় পৌনে একটা নাগাদ নিয়ে আসা হয় কাটোয়া শ্মশানে। শুরু হয় দাহপর্ব।
শুক্রবার রাতে বাড়ির কাছেই একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন স্বরুপ গড়াই নামে ওই বিজেপি কর্মী। অভিযোগ সেইসময় একদল দুষ্কৃতী চড়াও হয় তার উপর। শুরু হয় বোমাবাজি। দুষ্কৃতীরা গুলি ছোঁড়ে। একটি গুলি লাগে স্বরূপের বুক ও পেটের মাঝে। অভিযোগ হামলাকারীদের হাতে বেধড়ক মার খান স্বরূপের বাবা ভূবনেশ্বর গড়াইও। পা ভেঙে তিনি সিয়ান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে পরিবার সূত্রে জানা যায়। শুক্রবার গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিয়ান হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই তাকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। সেখানেই রবিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। তারপর মৃতদেহ নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েন চলে। এনআরএস হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করিয়ে পুলিশ কলকাতা থেকে সিয়ান হাসপাতাল মর্গে পৌঁছে দেয় দেহ।
অজয় নদে মঙ্গলকোটে লোচনদাস সেতু পার হয়ে কিছুটা গেলেই বাঁসাপাড়া বাসস্ট্যান্ড। সেখান থেকে অল্প দুরত্বেই রামকৃষ্ণপুর গ্রাম। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রামকৃষ্ণপুর গ্রামবাসীদের অনেকেই মতদেহ সৎকারের কাজে কাটোয়া শ্মশানে আসেন। স্বরূপ গড়াইদের পুর্বপুরুষদেরও কাটোয়াতেই দাহ করা হয়েছিল। তাই বুধবার স্বরূপ গড়াইয়ের দেহ নিয়ে আসা হয় কাটোয়া শ্মশানে। বাবা মায়ের একমাত্র পুত্র ছিলেন স্বরূপ। তার সম্পর্কে ভাইপো দীপঙ্কর গড়াই স্বরূপবাবুর মুখাগ্নি করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই কাটোয়া এলাকায় গুঞ্জন ওঠে কাটোয়া শ্মশানে স্বরূপ গড়াইয়ের দেহ সৎকারের জন্য নিয়ে আসা হচ্ছে। রাতভর কাটোয়া শ্মশান এলাকায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। এদিন বুধবার সকাল থেকেই প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। মৃতদেহের সঙ্গে ছিলেন বীরভূম ও পূর্ব বর্ধমান জেলার দলীয় নেতৃত্বরা এবং প্রচুর কর্মী সমর্থক। মৃতদেহে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। নিহতের ভাইপো দীপঙ্করবাবু বলেন, ”একটি সাইকেল সারানোর দোকান চালাতেন কাকা। পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস ছিলেন। আমরা চাই কাকার পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া হোক।”
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.