ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠকে দেখা গেল নানুরে নিহত বিজেপি কর্মী খুনে অন্যতম মূল অভিযুক্ত তৃণমূলের জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কেরিম খানকে। এমনই ছবি স্যোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইট ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের পেজে। এই অভিযোগে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজারা। যা নিয়ে রীতিমতো বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
[আরও পড়ুন: আটকানো গিয়েছে ধস, অবশেষে স্থিতাবস্থায় বউবাজার]
তৃণমূলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যে ছবি ঘিরে বিতর্ক, তা পুরনো ছবি। তৃণমূল নেতা স্বরূপ গড়াইয়ের খুনের অনেক আগে তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠকের ছবি। যেখানে অনুব্রত মণ্ডল-সহ অনান্য নেতাদের পাশাপাশি কেরিম খানও উপস্থিত ছিলেন। বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা তাঁর ফেসবুক পেজে অভিযোগ করেছেন, “৬ সেপ্টেম্বর নানুরে বিজেপি কর্মী স্বরূপ গড়াইকে গুলি করে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। ৭ সেপ্টেম্বর অভিযোগ দায়ের হয় নানুর থানায়। পুলিশের খাতায় ফেরার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃণমূলের জেলা পরিষদ পূর্ত কর্মাধ্যক্ষকে ওই দিনই দেখা গেল তৃণমূলের জেলা মিটিংয়ে। সেই ছবি মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট হয়েছে। কোথায় নিরপেক্ষ তদন্ত? তাই আমরা এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত চাই।”
প্রসঙ্গত, গত ৬ সেপ্টেম্বর নানুরের রামকৃষ্ণপুর গ্রামে বিজেপি তৃণমূল সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন বিজেপি নেতা স্বরূপ গড়াই। চিকিৎসারত অবস্থায় ৯ সেপ্টেম্বর কলকাতায় তাঁর মৃত্যু হয়। নিহতের দেহ নিয়ে শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের চাপানউতোর। এই ঘটনায় নিহতের ভাই অরূপ গড়াই ৭ সেপ্টেম্বর নানুর থানায় তৃণমূলের জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কেরিম খান-সহ ১১ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু, মূল অভিযুক্ত কেরিম খানকে গ্রেপ্তারের দাবিতে নানুর থানার সামনে ও সিউড়ি জেলা পুলিশ সুপারের দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করে বিজেপির নেতা কর্মীরা। সূত্রে খবর, এই ঘটনার পর থেকে গ্রামছাড়া কেরিম খান।
এদিকে এদিন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কেরিম খান বলেন, “গত ৭ সেপ্টেম্বর বোলপুরে জেলা পার্টি আফিসের নানুরের কোর কমিটির মিটিংয়ে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ এবং আমি ছিলাম। অনুব্রত মণ্ডল ছিলেন না। অনুপম হাজরা যে ছবি দিয়েছে তা ভুয়ো।” অন্যদিকে সিউড়িতে জেলা পুলিশ সুপারের দপ্তরের সামনে নানুরের অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আন্দোলন চতুর্থ দিনে পড়ল। এদিনও মঞ্চ থেকে নানুরে স্বরূপ গড়াইয়ের হত্যাকারী হিসাবে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কেরিম খান ও তৃণমূল কর্মী বাপ্পা চৌধুরিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। সুমন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অভিযুক্তদের সাতদিনের মধ্যে গ্রেপ্তার না করলে সারা বীরভূম জুড়ে আগুন জ্বলবে। তাঁর অভিযোগ, বেশ কিছু পুলিশকর্মী তৃণমুলের দলীয় কর্মীদের মতো কাজ করছে। সেজন্য রাজ্যে গণতন্ত্র বলে কিছু নেই।”
[আরও পড়ুন: মালিককে তাড়িয়ে কারখানা দখল, দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যে আতঙ্কিত ব্যবসায়ী]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.