চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: কারও ছিল আন্ডার কাট, কারও ক্লাসিক কাট। কারও আবার চুলের স্টাইল পেছনে ও কানের উপরে চুল একদম ছাঁটা। পিছনে মাথার অর্ধেক উপর থেকে কাটা, যাকে বলা হয় ফেড কাট। লকডাউনের জেরে সেলুনে যেতে না পেরে বাহারি কাট বা স্পাইক চুলের বারোটা বেজে গেছে। এই পরিস্থিতিতে স্টাইলিস্ট চুল স্রেফ উড়িয়ে দিলেন একদল যুবক। শুধু যুবকরা নন, পাকা চুলে হেনা করা পাড়ার কাকু, ছোট শিশুরাও দেখাদেখি মস্তক মুণ্ডন করে নেড়া হয়ে গেলেন। ব্যাপারটা একটু জমাটি
করতে তার নাম দিলেন – লকডাউন ছাঁট!
শনিবার এভাবেই নতুন হেয়ারস্টাইলে মাতলেন আসানসোলের জামুড়িয়ার হিজলগড়ার কাজী পাড়ার বাসিন্দারা। পাড়ার প্রায় ৮০ শতাংশ ছেলে, বুড়ো এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। তাঁদের স্পষ্ট কথা, সেলুন বন্ধ। তাই চুলের ইমো সুইপ, লোয়ার স্পাইক, বাজ কাট স্টাইল ঠিকমতো কাটা যাচ্ছিল না। তাই মস্তক মুণ্ডনের সিদ্ধান্ত। এদিন এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, কাজী জুয়েল, কাজী সোহেল, কাজী স্বপনরা মাথা নেড়া করে ফেলেছেন।
‘‘সেলুন তো বন্ধ, আপনাদের মাথার চুল কাটল কে?’’ প্রশ্নের জবাবে বাসিন্দারা জানালেন, দাড়িকাটার রেজার দিয়েই একে অপরের চুল কেটে দিয়েছেন। একটু বয়স্ক যাঁরা, তাঁরা বলছেন, ‘‘চুল পেকে গেছে আমাদের। তাই মাথায় কালো বা লালচে রং করা ছিল। ওই রং সেলুনেই হত। চুলের রং উঠে গিয়ে এখন তামাটে বা হলদেটে হয়ে গেছে। তাই কেটে ফেললাম।’’ তবে ছোটদের চুল কাটা হল কেন? তাঁদের জবাব, এই গরমে চুল বেড়ে গেছে। মাথা দিয়ে দরদর করে ঘাম পড়ছে। তাই ওদেরও মস্তক মুণ্ডন করে দেওয়া হল।
কয়েকদিন আগে দেখা যায় হাওড়ার উলুবেড়িয়ার বিভিন্ন গ্রামে মস্তক মুণ্ডন শুরু হয়েছিল গণহারে। করোনার জীবাণু নাকি বাতাসে উড়ে বাসা বাঁধতে পারে মাথায়, সেই গুজব থেকে এই ব্যবস্থা বলে জানিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। তবে জামুড়িয়ায় মস্তক মুণ্ডনের ক্ষেত্রে তেমন কোনও যুক্তি নেই বলেই দাবি কাজী পাড়ার বাসিন্দাদের। কারণ যাইই হোক, তবে বৈশাখের গরমে নেড়া মাথা মন্দই বা কী!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.