ধীমান রায়, কাটোয়া: আষাঢ় মাসের প্রায় পুরোটাই কেটেছে অনাবৃষ্টিতে। শ্রাবণ মাসের প্রথম সপ্তাহেও কাঠফাটা রোদ। ফলে গরমে হাঁসফাস দশা কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির বাসিন্দাদের। তেমনই বৃষ্টির অভাবে শুকনো খটখটে মাঠঘাটও। অধিকাংশ ক্ষেত্রে চাষের কাজ শুরুই করতে পারেননি কৃষকরা। তাই বৃষ্টির কামনায় এবার ব্যাঙের বিয়ে দিলেন আউশগ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো ছাদনাতলা তৈরি করে হিন্দুশাস্ত্র মতে সোমবার কল্যাণপুর গ্রামে দুটি ব্যঙের বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ে শেষে নববিবাহিত ‘ব্যাঙ দম্পতি’-কে ঘোরানো হয় গোটা গ্রাম।
তীব্র দাবদাহে বিপর্যস্ত দক্ষিণবঙ্গের জনজীবন। বৃষ্টির দেখা নেই। কত দিনে বৃষ্টির দেখা মিলবে সে বিষয়েও কোনও আশার বার্তা দিতে পারছে না আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। বরং ইতিমধ্যেই হাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি তাতে কলকাতায় বৃষ্টির ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৫ শতাংশে। একই ছবি পূর্ব বর্ধমান-সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই। তবে পূর্ব বর্ধমান বরাবরই খরা প্রবণ। ফলে এবারের অনাবৃষ্টির জেরে প্রবল ক্ষতির মুখে আমন চাষিরা। তাই বৃষ্টির কামনায় এবার জাঁকজমক করে ব্যাঙের দিলেন আউশগ্রামের কল্যাণপুরের বাসিন্দারা।
এলাকার বাসিন্দাদের কথায়, “আমরা শুনেছি ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হয়। তাই পুরোহিতের বিধান নিয়ে শাস্ত্র মেনে ব্যঙের বিয়ের আয়োজন করেছি। গ্রামের সকলের চাঁদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আউশগ্রাম ১ ব্লকে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়। আউশগ্রাম ১ ব্লকের-সহ কৃষি অধিকর্তা দেবতনু মাইতি বলেন, “এবছর স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৪০শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। এলাকায় ৬০শতাংশের বেশি জমিতে রোয়ানোর কাজ শুরু হয়নি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টিপাত হলেও কৃষকরা সময়ে রোয়ানোর কাজ করতে পারবেন। কিন্তু তা না হলে প্রবল সমস্যা দেখা দেবে।” এখন অপেক্ষা, স্বস্তির বৃষ্টির কবে ধরা দেয় দক্ষিণবঙ্গবাসীর কাছে।
ছবি: জয়ন্ত দাস৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.