বাবুল হক, মালদহ: দুঃসময়ে অসহায় মানুষদের দিকে বন্ধু হয়ে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেকেই। লকডাউনের দীর্ঘ সময়ে কোথাও কেউ খাবার পাচ্ছেন না, তো কেউ রেশন পাচ্ছেন না, কেউ আবার বাড়ি ফিরতে না পারার দুঃখ চেপেই মনমরা হয়ে দিন কাটিয়ে দিচ্ছেন। এমন মানুষজনের অন্তত দু’বেলা পেট ভরে খাবারের ব্যবস্থা করে দিতে প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরির উদ্যোগে খোলা হয়েছে – ফ্রি হোটেল। বুধবার থেকে সেখানে ফুটপাথের বাসিন্দাদের খাওয়ানো শুরু হয়েছে। পেটভরে ডিম-ভাত খেয়ে অন্তত স্বস্তির নিঃশ্বাসটুকু ফেলছেন তাঁরা।
মালদহের বালুচর এলাকা। সেখানে বেশ কয়েকটি ঝুপড়ি হোটেল রয়েছে। লকডাউনে সেসবের ঝাঁপ বন্ধ। এদিকে, খেতে না পেয়ে ফুটপাথবাসী কিংবা শ্রমিক-মজুরদের দুর্দশার শেষ নেই। একদিকে, লকডাউনের জেরে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাতে টাকাপয়সা নেই। দু’বেলা পেট ভরে খাওয়া দূরে থাক, না খেয়েই দিন কাটাতে হচ্ছিল অনেককে। সেসব চোখ এড়ায়নি রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরির। তাঁরই উদ্যোগে প্রথমে বালুচর এলাকায় দুস্থদের মধ্যে রেশন বিলি শুরু হয়। তাতেও সমস্যার বিশেষ সুরাহা হয়নি।
এরপরই তিনি একেবারে রান্না করে খাওয়ানোর উদ্যোগ নেন। বালুচরের ওই ঝুপড়ি হোটেলগুলি খুলে দেওয়া হয়। সেখানে রান্নাবান্না করে, রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো অভুক্তদের ডেকে সাদরে খাওয়ানো হয় ভাত-ডাল-ডিমের ঝোল। বুধবার থেকে তাঁদের খাওয়াদাওয়া চলছে এই হোটেলে। বিলকুল নিখরচায়। বৃহস্পতিবার সেই ‘ফ্রি হোটেল’-এ গিয়ে দেখা গেল, কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরি নিজে পরিবেশন করে খাওয়াচ্ছেন। খিদে পেটে চেয়ার-টেবিলে বসা মানুষগুলো চোখের সামনে গরম ভাত আর ডিমের ঝোল দেখেই পরম তৃপ্তি পেলেন। তারপর প্রায় এক নিঃশ্বাসে চেটেপুটে খেলেন পুরোটা। কতদিন এসব খাওয়া হয়নি যে! এবার থেকে ভালমন্দ – যাই হোক, খাবারটুকু অন্তত জুটবে। একথা ভেবেই তাঁরা বেশ খানিকটা নিশ্চিন্ত হলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.