বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: সুদের অঙ্ক কষার প্রয়োজন নেই। সোজা হিসেব, আপনা যত টাকা দেবেন, তার দ্বিগুণ, এমনকী তিনগুণ টাকাও ফেরত পেয়ে যাবেন। এভাবেই গরিব মানুষদের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হত। প্রতারণার কারবার চলছিল নদিয়ার শান্তিপুরে। শেষপর্যন্ত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। তার বাড়ি থেকে নগদ প্রায় ৭ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, ওই ব্যক্তি অনেকে নাকি এমনও বলেছিল যে, যদি সে জাল টাকাও দেয়, তাহলেও কোনও অসুবিধা হবে না! তবে জালই হোক কিংবা আসল, টাকা ফেরত পাননি কেউই।
এক-আধঘণ্টার ব্যাপার তো নয়, ব্যাংকে যাওয়া নামে প্রায় গোটা একটি দিন নষ্ট। গাঁ-গঞ্জে খেটে-খাওয়া মানুষেরা এতটা বিলাসিতা দেখাতে পারেন না। কারণ, একদিন কাজে না গেলে যে সেদিনের মজুরিটাও যে মার যাবে। সংসার খরচ বাঁচিয়ে বাড়তি টাকা বাড়িতেই রেখে দেন তাঁরা। শান্তিপুরের ডাকঘর মোড় এলাকা থেকে সত্যেন্দ্রনাথ দে নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, দ্বিগুণ টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গরিব খেটে খাওয়ার মানুষের জমানো টাকা আত্মসাৎ করেছে সে। যখন তার কাছ কেউ টাকা ফেরত চাইতেন, তখন পুলিশের ভয় দেখাত সত্যেন্দ্রনাথ। বলত, শান্তিপুর থানার পুলিশের সাহায্যে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেবে। এই প্রতারকের খপ্পরে সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেকেই। কিন্তু, মিথ্যা মামলার ভয়ে মুখ খোলার সাহস হয়নি। শেষপর্যন্ত গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযুক্ত সত্যেন্দ্রনাথ দে-কে ধরে ফেলল পুলিশই। তার বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলাও দায়ের করেছেন তদন্তকারীরা।
[ পোস্ট অফিসে জিরো ব্যালেন্সে অ্যাকাউন্ট খুললেই মিলবে টাকা! ব্যাপারটা কী?]
এদিকে আবার এই প্রতারণার কারবারে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, প্রায় তিরিশ বছর ধরে প্রতারণার কারবার চালাচ্ছিল সত্যেন্দ্রনাথ। এতদিন পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি কেন? পুলিশ যদি আরও আগে সত্যেন্দ্রনাথ দে-কে গ্রেপ্তার করত, তাহলে এত মানুষকে সর্বস্বান্ত হতে হত না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.