মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: কালীপুজোর আনন্দ বদলে গেল বিষাদে। সারারাত পুজোর আনন্দে মেতে ওঠার পর সকালে দামোদরে স্নান করতে গিয়েছিলেন ১১ জন বন্ধু। স্রোতের তোড়ে তলিয়ে গিয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা। হাওড়ার (Howrah) উদয়নারায়ণপুর এলাকার নয়াচক গ্রামের এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। ওই চার নিখোঁজ যুবকের দেহ উদ্ধারে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজে তদারকি করছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার আমতার বালিচক অঞ্চলের শাচক গ্রামে কালীপূজা (Kali Puja) ছিল। আনন্দ করার জন্য সেখানে পৌঁছে গিয়েছিল শানপুরের বাসিন্দা ১১ জন বন্ধু। সারারাত পুজোয় আনন্দ করার পর সকালে ১১ জন নয়াচক গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া দামোদরে স্নান করতে নামেন। তাঁরা স্নান করায় সময় আচমকা ৪ যুবক নদীর স্রোতে তলিয়ে যেতে থাকে। খবর পেয়ে গ্রামের লোকেজন ছুটে আসেন। তাঁদের উদ্ধার করার চেষ্টা করলেও ৪ যুবকের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। বাকি সাতজন অবশ্য সাঁতরে পাড়ে উঠে আসতে সক্ষম হন।
পুলিশ সূত্রে খবর, পেঁড়ো থানার অন্তর্গত খিলা জিপিতে স্নান করতে নেমে যে চারজন এখনও নিখোঁজ, তাদের নাম সুমন সাঁপুই, শুভজিৎ মণ্ডল, তন্ময় দাস, স্বর্ণেন্দু পাত্র। সকলেরই বয়স ২০ থেকে ২২ বছরের মধ্যে। তাঁরা সকলেই হাওড়ার বাসিন্দা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন উদয়নারায়ণপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক সমীর পাঁজা, উদয়নারায়ণপুর ব্লকের বিডিও প্রবীর কুমার সিট-সহ অন্যান্যরা। আসে উদয়নারায়ণপুর ও পেঁড়ো থানার পুলিশ বাহিনী ও আমতার ডিএসপি কৃষ্ণেন্দু ঘোষদস্তিদার। ঘটনার পরেই স্থানীয় মৎস্যজীবীরা নৌকায় করে জাল ফেলে নিখোঁজদের খোঁজার চেষ্টা করেন। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ খোঁজার পরেও নিখোঁজদের কাউকে উদ্ধার করতে পারেনি তাঁরা। খবর দেওয়া হয় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরকে।
তাদের একটি দল সন্ধেয় এসে নদীতে খোঁজ শুরু করে নিখোঁজদের। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওই যুবকদের নদীর ওই জায়গায় স্নানে নামতে বারণ করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল ওই জায়গায় গভীরতা রয়েছে এবং স্রোতও রয়েছে। তাই যেন তারা ওখানে না নামেন। কিন্তু তাঁরা তাদের সতর্কবার্তায় কান না দিয়ে ওখানেই স্নান করতে নামেন। ফলে বিপদের কবলে পড়েন তাঁরা। সমীর পাঁজা বলেন, ”স্থানীয়দের চেষ্টায় বাকিদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও আমরা আসি ঘটনাস্থলে। তল্লাশি শুরু করে স্থানীয়রা। শেষে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের লোক আসে। তারাও তল্লাশি শুরু করছে।” কিন্তু রাত পর্যন্ত কাউকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.