পলাশ পাত্র, তেহট্ট: সিপিএম নেতা টিঙ্কু শেখ খুনের ঘটনায় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য-সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করল নদিয়ার নাকাশিপাড়া থানার পুলিশ। রাজনৈতিক সংঘাতের জেরে খুন বলেই দাবি সিপিএম নেতৃত্বের। যদিও তৃণমূল সেই দাবি মানতে নারাজ। বরং ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে ওই সিপিএম নেতাকে খুন হতে হয়েছে বলেই পালটা দাবি তৃণমূলের।
বুধবার রাতে নদিয়ার নাকাশিপাড়ার মুণ্ডমালা পাড়ায় রাতভর কবাডি খেলার আয়োজন করা হয়। সেখানেই ছিলেন বছর পঁয়তাল্লিশের সিপিএম নেতা টিঙ্কু শেখ। খেলা উপলক্ষে তারস্বরে মাইক বাজছিল মাঠ চত্বরে। তাঁর স্ত্রী পারভিনা বেওয়া বলেন, “খেলার মাঠের কাছে অটোস্ট্যান্ডে আমার স্বামীকে মাংস খাইয়ে গুলি করে খুন করা হয়। ঘটনাস্থলে ছ-সাতজন ছিল। আমার বাড়িতে সাড়ে তিন কিলো মাংস রান্না করা হয়েছিল। সেই মাংস ওরা খায়। টিফিন কৌটো করে বাড়ি থেকে সেদিন মাংস নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এমনকি খাওয়া হয়ে গেলে রাত ন’টা নাগাদ টিঙ্কু সেই টিফিন কৌটো বাড়িতে ফেরতও দিতে আসে। ও বাড়ি আসতেই ফোন আসে সরিফুলের। আমি ওকে বাইরে যেতে বারণ করি। ও বলল ডাকছে যাই। বাইরে দেখি সরিফুল মোটরবাইকে চাপিয়ে ওকে নিয়ে চলে গেল। আধঘন্টা পর আমি ঘুমিয়ে পড়ি। আচমকা চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে পাই। শুনি আমার স্বামীই মারা গিয়েছেন। সরিফুল গুলি করে মেরেছে বলেই জানায় প্রতিবেশীরা। প্রত্যেকের শাস্তি চাইছি।” কিন্তু কেন টিঙ্কুকে খুন করা হল? পারভিনা বলেন, “সরিফুল একটি স্করপিও গাড়ি কিনেছিল কিস্তিতে। সেই টাকা দেওয়ার জন্য আমার ভাইয়ের মোটরবাইক ওর কাছ থেকে নেয়। মাসচারেক হয়ে গেলেও সেই গাড়ি ফিরিয়ে দিচ্ছিল না। এই নিয়ে দু-একটি কথাও হয়েছিল। বুধবার সকালে ওই গাড়ি ফিরিয়ে দেয় ও।”
ইতিমধ্যে পুলিশ সরিফুলের দেশি বন্দুকটি উদ্ধার করেছে। পুলিশ অভিযুক্ত কালো মোল্লাকে গ্রেপ্তার করেছে। এই খুনে আরও তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ধৃত পঞ্চায়েত সদস্য সরিফুল মণ্ডল দোগাছি পঞ্চায়েতের পাটপুকুরের বাসিন্দা। আপাতত ছদিনের পুলিশ হেফাজত রয়েছে সে। ঠিক কী কারণে খুন করা হল সরিফুলকে তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তবে সিপিএম নেতৃত্ব তৃণমূলের দিকেই অভিযোগ তুলেছে। স্থানীয় তৃণমূলের বিধায়ক কল্লোল খাঁ অবশ্য এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ব্যক্তিগত শত্রুতা থেকে এই খুন বলে জানিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.