সঞ্জীব মণ্ডল, শিলিগুড়ি: রাতভর বাড়ি ছিলেন না। কীর্তন শুনতে গিয়েছিলেন। সকালে বাড়ি ফিরে এক বৃদ্ধ দেখলেন, তাঁর ছেলে, বউমা ও দুই নাতি-নাতনি সকলেই মৃত! শিলিগুড়িতে একই পরিবারের ৪ জনের মৃত্যুতে রহস্য দানা বেঁধেছে। তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে ভক্তিনগর থা্নার পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, ৭ বছরের সীমা পাল ও ২ বছরের রাম পালকে সম্ভবত শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। কিন্তু, তাদের বাবা-মা কি খুন হয়েছেন নাকি আত্মহত্যা করেছেন? ধন্দে তদন্তকারীরা।
[এবার সরকারি স্কুলে শিক্ষকের লালসার শিকার ছাত্রী ]
শিলিগুড়ির শহরের উপকণ্ঠে অসিগড়ের পাপিয়াপাড়ায় স্ত্রী, এক ছেলে ও মেয়ে-কে নিতে থাকতেন বাসুদেব পাল। পেশায় তিনি মৃৎশিল্পী। ছেলের ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকেন নৃপেন পাল নামে ওই বৃদ্ধও। জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে কীর্তন শুনতে গিয়েছিলেন ওই বৃদ্ধ। রাতে আর বাড়ি ফেরেননি। এক আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে যান। নৃপেন পালের দাবি, শনিবার সকালে অসিগড়ের বাড়িতে ফিরে দেখেন, সদর দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। অনেক ডাকাডাকি করেও কারও সাড়া পাননি। এরপর বাড়ির বারান্দায় ছেলের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান ওই বৃদ্ধ। প্রতিবেশীদের খবর দেন নৃপেনবাবু। দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢোকেন তাঁরা। দেখা যায়, বারান্দায় নৃপেন পালের ছেলে বাসুদেব পালের দেহ ঝুলছে। তবে তাঁর হাত দুটি গামছা দিয়ে বাঁধা। শোওয়ার ঘরে বাসুদেবের স্ত্রী ললিতার ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়। বিছানায় পড়েছিল ওই দম্পতির সাত বছরের মেয়ে সীমা ও ২ বছরের ছেলে রামের নিথর দেহ। ঘটনাটি জানাজানি হতেই তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে শিলিগুড়ি অসিগড়ের পাপিয়াপাড়ায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ভক্তিনগর থানার পুলিশ। চারজনের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
[দুর্ঘটনার ৩৮ দিন পর পুরুলিয়ার বাড়িতে ফিরল তরুণ বাঙালি গবেষকের দেহ]
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, পরিবারে তেমন কোনও অশান্তি ছিল না। তবে কোনও কারণে ইদানিং কিছুটা মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বাসুদেব পাল। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালে সপরিবারে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। ফেরেন দুপুরে। ওই আত্মীয় আবার সন্ধ্যায় বাসুদেব পালের বাড়িতেও এসেছিলেন। সুদেব পাল নামে ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, তাঁকে নিজের সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন বাসুদেব। তাই খোঁজখবর করতে নিহতের বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। তবে যে কারণেই এই ঘটনা ঘটে থাকুক না কেন, বাসুদেব পালের ছেলে ও মেয়েকে যে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে, তা নিয়ে একপ্রকার নিশ্চিত তদন্তকারীরা। কিন্তু, বাসুদেব ও তাঁর স্ত্রী ললিতাকে কীভাবে মারা গেলেন? তা স্পষ্ট নয়। ঘটনার তদন্তে শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানার পুলিশ।
[ভাগাড় কাণ্ডে আতঙ্ক, পঞ্চায়েত ভোটের মেনু থেকে বাদ পড়ল মাংস]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.