রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: ফের মড়কের হাতছানি জলদাপাড়ায়! প্রশ্ন উঠতে শুরু করল চারদিনে পাঁচ গন্ডারের মৃত্যুর পর। চরম বিপর্যয় ঘনিয়ে আসতে পারে প্রায় তিনশো একশৃঙ্গ গন্ডারের আবাসভূমি জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে এমনই শঙ্কা। শেষ সুমারিতে ২৭২টি গন্ডারের খোঁজ মিলেছিল। পাঁচটির মৃত্যুর পর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ২৬৭। কিন্তু একের পর এক তৃণভোজীর দেহ উদ্ধার হলেও রোগের কারণ এখনও অজানা। অন্তত বনকর্তাদের তেমনই বক্তব্য।
জঙ্গলে অ্যানথ্রাক্স ছড়াল কি না জানতে মৃত গন্ডারের রক্তের নমুনা বেলগাছিয়ার পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। ওই পরিস্থিতিতে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। জঙ্গলের শিসামারা ও মালঙ্গি বিট এলাকাকে ‘কোয়ারেন্ডাম’ অর্থাৎ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। সেখানে বন্যপ্রাণীদের যাতায়াত বন্ধ করেছে বনদপ্তর। দুই এলাকাকে ঘিরে রেখেছে কুনকি হাতি।
বুধবার জলদাপাড়া অভয়ারণ্য ছেড়ে নিজের শাবককে সঙ্গে নিয়ে লোকালয়ে চলে আসে মা গন্ডার। কিছুক্ষণ পর রহস্যজনকভাবে মারা যায় গন্ডারটি। আরেকটি গন্ডারেরও দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ছ’টি হাতি এবং দুটি ক্রেনের সাহায্যে গন্ডারটির দেহ উদ্ধার করা হয়। কী কারণে গন্ডারটির মৃত্যু হল, সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি। সেই রেশ এখনও কাটেনি। তার আগেই এই নিয়ে চার দিনে মোট পাঁচটি গন্ডারের মৃত্যু হয়েছে।
তার উপর আবার বৃহস্পতিবার জলদাপাড়া জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় একটি হাতিরও মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বনকর্মীদের দাবি, তার দেহে মিলেছে একাধিক ক্ষতচিহ্ন। মনে করা হচ্ছে, হাতির দেহাংশে পচন ধরে গিয়েছে।যার ফলে স্বাভাবিকভাবে জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে আতঙ্কের ছায়া।
ডিএফও কুমার বিমল বলেন, “নিহত গন্ডার এবং হাতির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনও রিপোর্ট হাতে এসে পৌঁছয়নি। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। জঙ্গলের শিসামারা ও মালঙ্গি বিট এলাকাকে ‘কোয়ারেন্ডাম’ অর্থাৎ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। সেখানে বন্যপ্রাণীদের যাতায়াত বন্ধ করেছে বনদপ্তর। দুই এলাকাকে ঘিরে রেখেছে কুনকি হাতি।” এদিকে, গন্ডার এবং হাতির অস্বাভাবিক মৃত্যুর জেরে অনেকেরই মনে উঁকি দিচ্ছে অ্যানথ্র্যাক্স আতঙ্ক। কেউ কেউ মনে করছেন, এই রোগের জেরে মৃত্যু হচ্ছে বন্যপ্রাণীদের। যদিও এ ব্যাপারে বনদপ্তরের তরফে এখনও নিশ্চিত করে কিছুই বলা হয়নি। তবে বন্যপ্রাণীদের রহস্যমৃত্যু ভাবাচ্ছে বনাধিকারিকদেরও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.