ছবি: প্রতীকী
রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: বাবার দেহ পড়ে রেললাইনে। স্ত্রী এবং দুই মেয়ে পড়ে রয়েছেন নদীতে। আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) ২ নম্বর ব্লকের উত্তর চিকলিগুড়ির ঘটনার পর কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকঘণ্টা। তবে এখনও অধরা সমাধান সূত্র। ঠিক কী কারণে একই পরিবারের চারজনের নির্মম পরিণতি হল, তা বুঝতে পারছেন না কেউই। আর্থিক অনটন নাকি অন্য কোনও কারণে এমন চরম সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁরা তা নিয়েই ধন্দে তদন্তকারীরা। পুলিশ মৃতদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার কিনারা করার চেষ্টা করছে।
স্থানীয়দের দাবি, উত্তর চিকলিগুড়ির বাসিন্দা পিঙ্কু পাল। বয়স পঁয়তাল্লিশের গণ্ডি ছুঁয়েছে। স্ত্রী ছাড়াও ছিল দুই কন্যাসন্তান। নিজেকে নিয়ে মোট চারজনের পেট চালানোর দায় ছিল তাঁর কাঁধেই। লকডাউনের আগেও তাও নানা কাজ করে সংসার চালাতে পারতেন তিনি। তবে লকডাউন দিন থেকে উপার্জনের সব পথই বন্ধ হয়ে যায়। নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসারে সঞ্চয়ও যেন বিলাসিতা। তাই ছিল না কিছুই। সংসারে খাওয়াদাওয়াও জুটছিল না চারজনের। তার ফলে নষ্ট হচ্ছিল পারিবারিক শান্তি। দাম্পত্য অশান্তিও বাড়ছিল প্রতিদিন। স্ত্রী, সন্তানের মুখে খাবারটুকুও পৌঁছে দিতে না পেরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন পিঙ্কু। তার ফলে বেশ কয়েকদিন তাঁর আচরণে বদল আসছিল। সব সময়ই যেন কিছু একটা ভাবছিলেন তিনি। তবে এমন কাণ্ড যে ঘটবে তা বোধহয় ভাবতে পারেননি কেউই।
এলাকাবাসীর দাবি, গত বৃহস্পতিবার রাতে চারজনকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, স্ত্রী জয়ন্তী পাল, দুই মেয়ে পায়েল এবং কোয়েলকে খুন করে রায়ডাক নদীতে ফেলে দেয়। তারপর নিজে শামুকতলা রেললাইনে আত্মঘাতী হন। এরপর শনিবার এলাকার মানুষ একটি মৃতদেহ নদীতে ভাসতে দেখে খবর দেয় ভাটি বাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পিঙ্কুর বড় মেয়ে পায়েলের দেহ নদী থেকে প্রথম উদ্ধার করে। পরে যদিও স্ত্রী এবং আরেক মেয়ের দেহও উদ্ধার হয়। ঠিক কী কারণে একই পরিবারের চারজনের এমনভাবে মৃত্যু হল, তার প্রকৃত কারণ বুঝতে পারছে না পুলিশও। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেই ঘটনার সমাধানসূত্র পাওয়া সম্ভব বলেই আশা তদন্তকারীদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.