অর্ণব আইচ: সবজির বস্তার আড়ালে পাচার পিস্তলের খোল। গ্রেপ্তার হওয়া চার পাচারকারীর বয়ানে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিহারের মুঙ্গেরে উদ্ধার হওয়া ৮০টি অস্ত্রের খোল পাচার হয়েছিল কলকাতা থেকে, পুলিসের জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই দাবি করেছে পাচারকারীরা। বিহার পুলিশের সন্দেহ, কলকাতা বা তার আশপাশেই তৈরি হচ্ছে পিস্তলের খোল। কলকাতা হয়ে তা পৌঁছে যাচ্ছে মুঙ্গেরের বেআইনি অস্ত্র কারখানায়। এই খোলগুলির ভিতরে যন্ত্রাংশ বসিয়েই তৈরি হচ্ছে আস্ত পিস্তল। পরে ‘অর্ডার’ মাফিক তা পাচার হচ্ছে এই রাজ্যেও।
পুলিশ সুত্রে খবর, সন্দেহভাজন কয়েকজন সবজি বিক্রেতার সন্ধান চালানো হচ্ছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। কারণ, সবজির আড়ালেই যে কলকাতা থেকে বিহারে অস্ত্র পাচার হচ্ছে, সেই খবর এসেছিল পুলিশের কাছে। কয়েকজন পাচারকারীর মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই এই খবর পায় পুলিশ। বিহারের লক্ষ্মীসরাইয়ে একটি মুঙ্গেরগামী বাস দাঁড় করিয়ে পুলিশ তল্লাশি চালায়। কয়েকটি সবজির বস্তা পরীক্ষা করতেই বেরিয়ে পড়ে ৮০টি পিস্তলের ‘বডি’। বাসের ভিতর থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় বিহারের চার অস্ত্র পাচারকারী মহম্মদ ইরফান, মহম্মদ ইমতিয়াজ, মহম্মদ মোক্তার ও মহম্মদ নাসিমকে। চার ধৃত ব্যক্তিই বিহার পুলিশের কাছে দাবি করে, কলকাতার এক এজেন্টের কাছ থেকে একেকটি ‘বডি’ আড়াই হাজার টাকায় কিনেছিল তাঁরা। মুঙ্গেরের অস্ত্র কারখানায় এই বডিগুলিই দ্বিগুণ দাম অর্থাৎ পাঁচ হাজার টাকা করে বিক্রির ছক কষেছিল তারা।
অস্ত্রের যন্ত্রাংশ তৈরি হয় মুঙ্গেরে বেআইনি অস্ত্র কারখানায়। এই খোল ব্যবহার করে পুরো অস্ত্র তৈরি হয়। তখন একেকটি পিস্তলের বিক্রি হয় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায়। কলকাতার এজেন্টের কাছ থেকে ওই অস্ত্রের খোল কিনে ট্রেনে করে বিহারের লক্ষ্মীসরাই বা জামালপুরে যায় দুষ্কৃতীরা। সেখান থেকে তারা সড়কপথে পৌঁছয় মুঙ্গেরে। এর আগেও কলকাতা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে বড় সংখ্যক পিস্তলের খোল। তাই কলকাতা বা তার আশপাশের কোনও জায়গায় এগুলি তৈরি হত বলেই মনে করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে মুঙ্গের জেলা পুলিশের কাছ থেকে অস্ত্রের খোল তৈরির খবর এসে পৌঁছেছে কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দাদের কাছে। কলকাতা বা তার আশাপাশের কোনও জেলায় এই অস্ত্রের খোল তৈরির কারখানা রয়েছে কিনা, তার খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.