সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: চিমনি থেকে গলগল করে ধোঁওয়া বার হচ্ছে। ঝাঁ চকচকে রাস্তা দিয়ে ছুটছে একের পর এক পণ্যবাহী লরি। আর খিদে পেটে থাকতে হচ্ছে না। এলাকাতেই মিলছে কাজ। এভাবে বদলে যাওয়া রঘুনাথপুরকে শিল্পতালুক গড়ার সূচনা করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আজ তাঁর অনুপস্থিতিতে যেন বারে বারে তাঁকে স্মরণ করছে ওই শিল্পতালুক।
রঘুনাথপুরের শিল্পায়নের কাণ্ডারী যেমন প্রয়াত সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া। ঠিক তেমনই প্রান্তিক পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরকে বদলে দেওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। তিনি প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাই একদিকে বাসুদেব আচারিয়ার হাত ধরে শিল্পায়নের প্রক্রিয়া। আর সেই প্রক্রিয়াকে সফল করতে বারে বারে রাজ্যের তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেনকে রঘুনাথপুরে পাঠানো। সর্বোপরি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের উপস্থিতিতে ডিভিসি, জয় বালাজি ও শ্যাম স্টিলের সূচনা।
জয় বালাজি কারখানা না গড়লেও, শ্যাম স্টিল পাততাড়ি গুটিয়ে নিলেও এখন আবার নতুন করে ডালপালা মেলেছে ওই শিল্প সংস্থা। যার ঢাকে কাঠি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়েই। ২০০৯ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি শ্যাম স্টিলের শিলান্যাস হয়েছিল তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর হাত ধরেই।
আরও কিছুটা ফ্ল্যাশব্যাকে গেলে ২০০৭-এর ১৯ জুন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রী সুশীল কুমার শিণ্ডে ডিভিসির রঘুনাথপুরের ১২০০ মেগাওয়াটের যে তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন সেই অনুষ্ঠানে ছিলেন প্রয়াত,প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কেন্দ্র- রাজ্যের যৌথ প্রয়াসে ঠিক তখন থেকেই রঘুনাথপুরে শিল্পায়নের পথ চলা শুরু। ওই বছরেই কয়েক মাস পরে পুজোর আগে ১৬ অক্টোবর জয় বালাজি প্রকল্পের শিলান্যাসও হয় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের হাত ধরে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায় বলেন, “আগামী প্রজন্মের জন্য বাংলাকে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। বাংলা জুড়ে কর্মসংস্থানের জন্য ছোট মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। সেই কাজেই তাঁর হাত ধরেই রঘুনাথপুরে শিল্পায়নের শুরু।” তাই আজ একের পর এক বিনিয়োগ আসছে এই রঘুনাথপুরে। শহরের চেহারাটাই বদলে গিয়েছে । ২০০৬ সালের ১ নভেম্বর পুঞ্চার পাকবিড়রাতে দাঁড়িয়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এই শিল্পায়নের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে ঘোষণা করেছিলেন ছররায় ছোট বিমানবন্দর গড়ার। যা আজ বাস্তবায়নের পথে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.