অর্ণব দাস, বারাকপুর: অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী খুনের কয়েকঘন্টা মধ্যেই গ্রেপ্তার তিনজন। ঘটনাটি বারাকপুরের মোহনপুর থানার চককাঠালিয়া আমবাগান এলাকার।
মৃতের নাম দীপেন্দুনাথ মণ্ডল (৭২)। ২০১৭ সালে স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকে তিনি বাড়িতে একাই থাকতেন। পরিচারিকাও ছিলেন। তিনিই মঙ্গলবার সকালে দীপেন্দুবাবুর বাড়িতে কাজে এসে দরজা খোলা অবস্থায় দেখলে সন্দেহ হয়। তার পরেই রক্তাক্ত অবস্থায় বৃদ্ধের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। খবর ছড়িয়ে পড়তেই জড়ো হয়ে যান স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলে আসেন (ডিসি) নর্থ গণেশ বিশ্বাস-সহ একাধিক পুলিশ কর্মী। তাঁরা ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখার পাশাপাশি স্থানীয় এবং পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলেন। তার পরই মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে কর্ডন দিয়ে বাড়ি ধীরে দেওয়া হয়।
মোহনপুর পঞ্চায়েত প্রধান নির্মল কর ঘটনাস্থলে এসে বলেন, “মৃতের দুই মেয়ে। একমেয়ে বিদেশে থাকেন। আরেক মেয়ে বারাকপুর অঞ্চলেই থাকেন। এসে শুনলাম, সকালে দরজা খোলা ছিল। তার মানে যে বা যারা খুন করেছে, তাঁরা পরিচিত। না হলে তো উনি দরজা খুলে ঘরে ঢোকাতেন না। মৃতদেহ নিজের চোখে দেখিনি। শুনেছি, মাথায় আঘাত সবথেকে বেশি। দেহের একাধিক জায়গায় কোপানো হয়েছে।” মৃতের জামাই পার্থপ্রতিম গিরি জানান, “কীভাবে কী হয়েছে আমরা জানি না। খুন হয়েছে এটুকু বলতে পারি। মাথায় ও বুকে আঘাত ছিল।”
তদন্তকারীরাও অনুমান করেন, পরিচিত কেউ এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তাছাড়াও মৃতের ঘর থেকে টাকা, সোনার গয়না চুরি হয়েছিল বলেই পুলিশ সূত্রে খবর। এরপর ঘটনাস্থল সংলগ্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে এলাকারই বাসিন্দা একজন যুবতী-সহ তিনজনকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা খুনের অভিযোগ স্বীকার করলে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ডিসি (নর্থ) গণেশ বিশ্বাস জানান, সিসি ক্যামেরার সূত্র ধরে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার রাত ৮ থেকে ১০টার মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতরা সকলেই মৃতের পরিচিত। এরা মাঝেমধ্যেই দীপেন্দুবাবুর বাড়িতে এসে টাকার বিনিময়ে প্রয়োজনীয় কাজ করে দিত। পাশাপাশি তারা মাঝেমধ্যে ধারও নিত। পুজোর আগে টাকা চাইতেই তারা সোমবার রাতে এসেছিল। কিন্তু বৃদ্ধ টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাকে খুন করে টাকা ও সোনা নিয়ে চম্পট দেয় ধৃতরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.