তিমিটিকে উদ্ধার করে পাঠানো হল সমুদ্রে।
সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: সমুদ্রের কাছেই নদী। নোনা জলে নদীর চড়ে ভেসে এসেছিল একটি তিমি। সেই দৈত্যাকার তিমিকে জীবিত উদ্ধার করে ফের পাঠানো হল গভীর সমুদ্রে। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের হারউড পয়েন্ট পোস্টাল থানার কামারের হাটের কাছে। স্থানীয় ও বনদপ্তর সূত্রে পাওয়া খবর অনুসারে বটতলা নদীর চরে সেই তিমিটি এসে আটকে গিয়েছিল।
গতকাল সন্ধ্যার পরে স্থানীয় কয়েক জন নদীর চরে জলের মধ্যে বড় কিছু একটা জিনিসকে নড়াচড়া করতে দেখেন। তাঁরা নদীর পাড়ে দ্রুত পৌঁছলে হতবাক হয়ে যান। কারণ, সেটি আর কিছু নয়। একটি তিমি এসে কম জলে আটকে রয়েছে। মুহূর্তে গ্রামের অন্যান্যদের খবর দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দারাই প্রথমে সেটিকে উদ্ধারকাজে হাত লাগান। কিন্তু ওই বিশাল মাপের তিমি পার থেকে বেশি জলে পাঠানো সম্ভব হচ্ছিল না। এদিকে কম জলে ছটফট করছিল বিশালাকার ওই প্রাণীটি। ফলে খবর দেওয়া হয় বনদপ্তরে।
বনদপ্তরের নামখানা রেঞ্জের বনকর্মীরা দ্রুত সেখানে চলে যান। তিমিকে উদ্ধারের কাজে হাত লাগানো হয়। কিন্তু বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে চেষ্টা করেও সেটিকে জলে পাঠানো সম্ভব হয়নি। তখন সিদ্ধান্ত হয়, রাতে সেটিকে ছাড়া সম্ভব হবে না। নদীর পাড়েই সেটিকে উদ্ধার করে জীবিত রাখার চেষ্টা করা হয়। সেটির যাতে কোনও রকম সমস্যা না হয়, সেদিকেও নজর দেওয়া হয়। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গায়ে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। তিমিটি লম্বায় প্রায় ২০ ফুট। গায়ের রং নীলচে। তিমিটি কোন প্রজাতির, তা নিয়ে নিশ্চিত নয় বনদপ্তর। তবে তার বয়স কম, সেই কথা জানানো হয়েছে।
শুক্রবার ফের সেটির শারীরিক পরীক্ষা হয়। দিনের আলোয় খুঁটিয়ে পরীক্ষার পরেই সেটি সুস্থ থাকায় জলে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বনদপ্তর ও স্থানীয়দের চেষ্টায় সেটিকে গভীর জলে নিয়ে গিয়ে ছাড়েন বনকর্মীরা। জানা গিয়েছে, বটতলা নদীর জল সমুদ্রে গিয়ে পড়ে। তিমিটি কোনও কারণে সমুদ্র দিয়ে নদীতে চলে এসেছিল। তারপর আর ফিরে যেতে না পেরে কম জলে পাড়ে আটকে যায়। ডিএফও নিশা গোস্বামী জানান, তিমিটিকে গঙ্গাসাগরের থেকে কিছু দূরে গভীর সমুদ্রে সুস্থ অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় খুশি বনদপ্তরের কর্মীরা ও সাধারণ মানুষজন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.