রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: একদিকে তিনি স্থপতিদেবের বাহন, আরেকদিকে অরণ্যের অন্যতম গুরুত্বপূ্র্ণ বাসিন্দা তিনি। তাই বিশ্বকর্মা পুজোর দিন হাতি ও মাহুতের সম্পর্ক আরও নিবিড় করার সুযোগ হাতছাড়া করল না জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ। চঞ্চল, অমরাবতী, মৈনাক ও পৃথ্বীরাজ – এরা সবাই বনদপ্তরের পোষা কুনকি হাতি। ওদের উপরেই জঙ্গলের নানা কাজে নির্ভর করতে হয় বনদপ্তরের কর্মীদের। তাই বুধবার ঘটা করে প্রতি বছরের মতো এবারও হাতিদের পুজো করা হল বনদপ্তরের তরফে।
এই হাতি পুজোর মধ্যে দিয়েই বনাঞ্চলে বয়ে গেল আগমনি হাওয়া। হাতি পুজোয় সামিল হলেন জাতীয় উদ্যান লাগোয়া বনবস্তিবাসী কয়েকশো মানুষ। উত্তরবঙ্গে সবথেকে বেশি কুনকি হাতির সংখ্যা জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে। এখানে ৬২টি কুনকি হাতি রয়েছে। এদেরই অনেককে সাজিয়েগুছিয়ে পুজো করেছেন বন কর্মী, আধিকারিকরা।
এদিন তাদের জন্য বিশেষ মেনু চার্ট তৈরি করা হয়েছে। নতুন চার্ট অনুযায়ী, হাতি পিছু পাঁচ কেজি লবণ, ৫ টি করে নারকেল, এক কাদি কলা-সহ আরও হরেক কিসিমের ভাল ভাল সব খাবার। পুজো উপলক্ষে বুধবার সব কুনকি হাতির ছুটি ছিল। তাই জঙ্গল টহল দেওয়ার কোনও তাড়াহুড়ো ছিল না। ছিল না জঙ্গল থেকে পাতা সংগ্রহ করার কোনও বাধ্যবাধকতা। আজ সকাল থেকে নেয়ে খেয়ে শুধু পুজো নেওয়ার পালা।
জলদাপাড়া বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও কুমার বিমল বলেন, “হাতি ও মাহুতের মধ্যে সম্পর্ক ভাল করতে আমরা বিভিন্ন পরবে হাতিদের সাজিয়েগুছিয়ে পুজো দিই। এতে হাতি ও মাহুতের সম্পর্ক নিবিড় হয়। এই পুজো ঘিরে আজ জলদাপাড়ায় উৎসবের মেজাজ। বনকর্মীদের সঙ্গে বনবস্তির বাসিন্দারাও এই পুজোয় সামিল হন।” চিলাপাতা বনবস্তির বাসিন্দা সৌমেন বোড়ো বলেন, “ এই দিনটার জন্য আমরা সারা
বছর অপেক্ষা করে থাকি। এই পুজায় আমরা সকলে উৎসাহ নিয়ে সামিল হই। পুজো উপলক্ষে জলদাপাড়ায় সকলের জন্য পেটভরে খিচুড়ি খাওয়ার ব্যবস্থাও থাকে।” বিশ্বকর্মা বাহনের আরাধনার জন্য এর চেয়ে আর কী-ই বা হতে পারে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.