দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: সোনারপুরের জামালউদ্দিন তাঁর প্রাসাদসম বাড়ির সুইমিংপুলে কচ্ছপ পুষেছিলেন। এবার সেই কচ্ছপ উদ্ধার করার উদ্যোগ নিলেন বনদপ্তরের কর্মীরা। বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও জামালউদ্দিনের বাড়ি থেকে কচ্ছপ উদ্ধার করা যায়নি বলে খবর। ওই বাড়িতে বুধবার রাতেই গিয়েছিলেন বনকর্মীরা। জেলার বন আধিকারিক মিলন মণ্ডলের নির্দেশে বারুইপুর রেঞ্জ অফিস থেকে ৬ সদস্যের দল প্রথমে সোনারপুর থানায় গিয়েছিলেন। তার পর সেখান থেকে জামাল সর্দারের বাড়িতে। তাঁদের সঙ্গে ছিল জাল ও কচ্ছপ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার অন্যান্য সামগ্রী। যদিও রাত ১০ টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তাঁরা ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন বাড়ির দরজার সামনে। কিন্তু জামালউদ্দিনের বাড়ির দরজায় তালা দেওয়া ছিল। গেটের চাবি না পাওয়ার ফলে দরজা খোলা যায়নি। তাই কচ্ছপ উদ্ধার না করেই ফিরে যেতে হয় বনদপ্তরের দলটিকে।
বৃহস্পতিবার দুপুরেও ওই বাড়িতে গিয়ে কচ্ছপ উদ্ধার করা যায়নি বলে খবর। বাড়ির দরজা খোলা না পাওয়ার ফলেই এদিনও সম্ভব হয়নি। জেলার বন আধিকারিক মিলন মণ্ডল জানান, কচ্ছপ উদ্ধারের জন্য বনকর্মীরা গিয়েছিলেন। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার পরেও দরজা খোলা পাওয়া যায়নি। তাই কর্মীরা ফিরে এসেছেন। দরজা খোলা হলে পুলিশকে খবর দিতে বলা হয়েছে। এদিকে বনদপ্তর সূত্রে খবর, কচ্ছপ উদ্ধার হলেই জামাল সর্দারের বিরুদ্ধে ‘ওয়াইল্ড লাইফ প্রোটেকশন’ আইনের ধারায় মামলা রুজু করা হবে। কেননা জামালের বাড়িতে যে কচ্ছপ দেখা গিয়েছে তার বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘ইন্ডিয়ান সফট শিল্ড টারটেল’। আর বেআইনিভাবে এই কচ্ছপ বাড়ির সুইমিংপুলে রাখার জন্য সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৭ বছরের জেল ও ২৫ লক্ষ টাকার জরিমানা হতে পারে জামালের।
অন্যদিকে, যত দিন যাচ্ছে ততই জামালের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ সামনে আসছে। জামালের বিরুদ্ধে খুনের মামলার অভিযোগের ঘটনাও সামনে এসেছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী হিংসায় মৃত্যু হয়েছিল হারান অধিকারী নামে এক ব্যক্তির। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, দুষ্কৃতীদের মারে মৃত্যু হয় হারানের। সেই হত্যার নাকি মাস্টারমাইন্ড ছিলেন জামালউদ্দিন। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, হারানের মৃত্যুর পর কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জামালও গ্রেপ্তার হয়েছিল।
তবে ঘটনাস্থলে জামালের থাকার কোনও প্রমাণ তদন্তকারীদের হাতে না আসায় ২ মাস পরেই জামিনে মুক্তি পায় জামাল। জামিনে এখন জেলমুক্ত জামাল। যদিও হারানের পরিবারের অভিযোগ, জামালের উপস্থিতিতেই বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। তার পর মৃত্যু। হারানের মৃত্যু পর তাঁর স্ত্রী ও ছেলে দীপ এলাকা ছেড়ে চলে যান। মামার বাড়িতে আশ্রয় নেন দুজনে। পড়াশোনার পাশাপাশি দিনমজুরের কাজ করেন দীপ। বাবার ‘হত্যাকারী’র কড়া শাস্তির দাবিতে সরব ছেলে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.