Advertisement
Advertisement

Breaking News

সাপ

সাপের বিষ বিক্রির অভিযোগ, দেখলেই সর্পপ্রেমী মোবারককে গ্রেপ্তারির নির্দেশ বনদপ্তরের

বনদপ্তরের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি অভিযুক্ত মোবারকের।

Forest department ordered to arrest a snake catcher
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:November 24, 2019 4:41 pm
  • Updated:November 24, 2019 4:42 pm  

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: তাঁর পরিচয় তিনি সর্প বিশারদ। তাই গৃহস্থ বাড়িতে সাপের দেখা মিলতেই ডাক পড়ে ঝাড়খন্ডের সর্প প্রেমী মোবারক আনসারির। বনদপ্তরের কর্মীদের এলাকার মানুষ না চিনলেও চেনেন এই মোবারককে। সেই মোবারককেই গ্রেপ্তারের বিজ্ঞপ্তি জারি করল পশ্চিম বর্ধমান জেলা বনদপ্তর।

শনিবারই হীরাপুরের লোকালয় এলাকা থেকে উদ্ধার হয় বিষাক্ত গোখরো সাপ। আসানসোল পুরনিগমের ৮২ নম্বর ওয়ার্ড রহমতনগরে একটি গ্রিলের দোকানে ওই সাপটি দেখা যায়। দোকানের মালিক মোবারককে ডাকলে তিনি সাপটি উদ্ধার করে নিয়ে যান। কিন্তু ওই সর্পবিশারদ সাপটিকে নিয়ে যাওয়ার পরই নড়েচড়ে বসে বনদপ্তর। বনদপ্তরের দাবি, মোবারক নামের ওই যুবক নিজেকে সর্পবিশারদ বলে পরিচয় দিলেও আসলে তিনি একজন সাপ কারবারি।

Advertisement

শনিবার সকালে দোকান থেকে ফোঁসফোস আওয়াজ পান দোকানের মালিক চাঁদ মহম্মদ। তিনি বলেন, ‘ইউটিউব, ফেসবুকে দেখেছি পাঞ্চেতের মোবারক আনসারিকে খবর দিলেই তিনি তৎক্ষনাত চলে আসেন। তাকেই আমরা খবর দিই। খবর দেওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে তিনি চলে আসেন। দোকানের ভেতর ঢুকে কৌশলে বিশাল সাপটিকে ধরে ফেলে। সাপটি একটি পাইপের মধ্যে ঢুকেছিল।’ তাঁর কথায়, ‘বনদপ্তর কে এসব আমরা জানি না। আমাদের ধারনা ছিল মোবারক আনসারিই বনকর্মী তাই তাকেই খবর দেওয়া হয়।’ জানা গিয়েছে, মোবারক যখন সাপটি উদ্ধার করছিল তখন ঘটনাস্থলে হীরাপুর থানার পুলিশ ছিল।

জেলা বনদপ্তরের আধিকারিক মিলনকান্তি মণ্ডল বলেন, ঝাড়খন্ডের ওই সর্প বিশারদ একজন আন্তর্জাতিক সাপের বিষের পাচারকারী। তার বিরুদ্ধে একাধিক বন্য আইনের অপরাধ সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। এক বন আধিকারিক বলেন, জেলার সমস্ত থানাগুলিকে বনদপ্তর তরফে শনিবার সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। ওই ব্যক্তিকে দেখতে পেলেই গ্রেপ্তার করে যেন বনদপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, গৃহস্থ বাড়ি হোক বা সরকারি দপ্তর, নির্বিষ হেলে সাপ থেকে বিষধর গোখরো কিংবা চন্দ্রবোড়া যে কোনও সাপ দেখা গেলেই ডাক পড়ত মোবারক আনসারির। সবাই তাঁকে চেনে ‘মোবারক স্নেক সেভার’ নামে। বনদপ্তরের কর্মীর পরিবর্তে আসানসোল, পুরুলিয়া, ধানবাদ এলাকার বাসিন্দাদের ঘরে ঘরে যত্ন করে রাখা থাকে মোবারকের ফোন নম্বর। রাতবিরেতে গেরস্থ বাড়িতে ডাক পড়লে সঙ্গে সঙ্গেই রওনা দেন মোবারক। নিমেষের মধ্যে ধরে ফেলেন যে কোনও বিষধর সাপ। কৌশলে সাপটিকে ঝাঁপিতে পুরে নিয়ে যান পাঞ্চেতের বাড়িতে। সেই বাড়িতে রয়েছে প্রচুর সাপ। মানুষ টিকিট কেটে সাপ দেখতে যান সেখানে। মোবারকের দাবি, সুস্থ হওয়ার পরে ওই সাপেদের পাঞ্চেতের জঙ্গলে ছেড়ে দেন তিনি।

[আরও পড়ুন: মৎস্যজীবীদের ট্রলারে অগ্নিকাণ্ড, কারণ খুঁজতে শুরু তদন্ত]

বনদপ্তরের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি মোবারকের। তিনি বলেন, ‘আমি একজন সমাজকর্মী। বনদপ্তরের নয়, রাতবিরেতে আমারই ডাক পড়ে এলাকায়। আসলে বনদপ্তরকে ডেকেও সাধারণ মানুষ সাড়া পান না। তাই আমাকেই যেতে হয়। আমি যত সাপ ধরি তার লাইভ ভিডিও করি। সাপকে বাঁচানোর জন্য বার্তা দিই। বন্যপ্রাণ আইন নিয়ে মানুষকে সতর্ক করি। উদ্ধার হওয়া সাপগুলি ছাড়ার সময় আবার লাইভ ভিডিও করি। ঝাড়খন্ড সরকার থেকে আমাকে বহু পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।” বনদপ্তরকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে বিষ কারবারের অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে আমাকে গ্রেপ্তার করুক। কোনও আপত্তি নেই।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement