দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: দক্ষিণরায় আতঙ্কে মঙ্গলবার দিনভর তোলপাড় হয়েছে কুলতলি (Kultali)। আতঙ্কে কাঁটা হয়েছিল স্থানীয়রা। গভীররাতে ধানক্ষেত থেকে টেনে বের করে তাকে খাঁচা বন্দি করেছেন বনদপ্তরের কর্মীরা। বুধবার সকালে খাঁচার দ্বার খুলতেই নদীতে ঝাঁপ দিল দক্ষিণরায়। স্বস্তিতে কুলতলির বাসিন্দারা।
গত কয়েকদিন ধরেই কুলতলির বিভিন্ন গ্রামে আনাগোনা বেড়েছিল দক্ষিণরায়ের। পূর্ণবয়স্ক পুরুষ বাঘের দৌরাত্ম্যে ঘুম ছুটে গিয়েছিল গ্রামের মানুষদের। বেশ কয়েকদিন নদীর পাড়ে বাঘের পায়ের ছাপ পাওয়া গেলেও চোখে পড়েনি বাঘের অস্তিত্ব। মঙ্গলবার সকালে বাঘকে ধান ক্ষেতের মধ্যে এই লক্ষ্য করেন গ্রামের কয়েকজন। তারপর খবর দেওয়া হয় বনদপ্তরকে।
বনদপ্তর এর কর্মীরা এসে বাঘটিকে ধরার জন্য তোড়জোড় শুরু করে। কিন্তু ঘুম পড়ানি বন্দুক নিয়ে বাঁশের মাথায় উঠে ঠাওর করতে পারেনি ধানক্ষেতে বাঘ কোথায় লুকিয়ে। অবশেষে বনদপ্তরের কর্মীরা ঠাকুরানী নদীর দিকে ফাঁকা রেখে বাকি তিনদিকে জাল দিয়ে ঘিরে বসায় খাঁচা।
সেই খাঁচায় রাত ন’টা নাগাদ ধরা পড়ে বাঘ। এরপর তাকে ঝড়খালি নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি, বাঘটিকে নিয়ে যাওয়া হয় বনি ক্যাম্পে। সেখানে পশু চিকিৎসকরা একপ্রস্থ চিকিৎসা করার পর কোন দ্বীপে ছাড়া হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঠিক হয় প্রাণীটিকে মুক্ত করা হবে কলস দ্বীপে। সেই মতো বুধবার সকালে খাঁচাবন্দি অবস্থায় ভুটভুটিতে বাঘটি রওনা হয় কলসদ্বীপের উদ্দেশ্যে। সেখানে যত্ন-আত্তি কম হয়নি। বুধবার ব্রেকফাস্টে পেল্লাই সাইজের বড়াল মুরগি। কিন্তু তা মুখে রোচেনি।মনমরা হয়ে সে বসেছিল নদীর দিকে তাকিয়ে। এরপর খাঁচার দরজা খুলতেই অমনি সটান নদীতে ঝাঁপ। কলসদ্বীপের কাছে পাড়ে উঠে মিলিয়ে গেল বাইনের জঙ্গলে। আর তাতেই একদিকে যেমন স্বস্তি পেল বাঘমামা অন্যদিকে বনদপ্তর আধিকারিকরা কর্মীরা সকলেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.